মদ জব্দের ঘটনায় কাস্টমস কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকি

45

নিজস্ব প্রতিবেদক

২ কন্টেইনার বিদেশি মদ জব্দ করার ঘটনায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এক কর্মকর্তাকে বিদেশ থেকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা থেকে এই মদের চালান জব্দ করা হয়। চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিপিইজেড) কাস্টম শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) রাশেদুর রহমানকে এই হুমকি দেয়া হয় বলে জানা গেছে।
এই বিষয়ে রাশেদুর রহমান জানান, গত ২৩ জুলাই মদ জব্দ করার পরদিন একটি বিদেশি নম্বর থেকে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। পরদিন ২৪ জুলাই বন্দর নগরের ইপিজেড থানায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছেন ওই কর্মকর্তা। পরে পুলিশ আদালতের কাছে এই জিডি তদন্তের অনুমতি চাইলে বিষয়টি সবার নজরে আসে।
এই বিষয়ে ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবিরুল ইসলাম জানান, ‘একজন কাস্টমস কর্মকর্তা নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছেন এবং আমরা তা তদন্ত করছি। ঘটনাটি তদন্ত করে আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারব আসলে কী ঘটেছে এবং কারা করেছে। ইপিজেড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রানা প্রতাপ জিডিটি তদন্ত করছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২২ জুলাই রাতে ভুয়া আইপি (ইমপোর্ট পারমিশন) ব্যবহার করে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৪০ ফুটের দুই কন্টেইনার বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের মদ খালাসের পর সোনারগাঁ যাওয়ার পথে র‌্যাব-১১ এর হাতে আটক হয়। পরদিন ২৩ জুলাই সকালে এআরও রাশেদকে একটি বিদেশি নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে গালাগালি এবং হুমকি দেওয়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
রাশেদুর রহমান জানান, মদের চালান বন্দর থেকে খালাসের তথ্য পেয়ে এবং তা যাচাই করার পর, আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ সম্পর্কে অবগত করি এবং পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সহায়তায় মদের চালানটি নারায়ণগঞ্জে আটক করা হয়।
তথ্যমতে, ২৩ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমাকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে কল করা হয়েছিল, যেটি ইউএসএ’র নম্বর এবং কলটি রিসিভ করার সঙ্গে সঙ্গেই রাশেদকে গালিগালাজ শুরু করে এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি নিজেকে রায়হান বলে পরিচয় দেন এবং কর্মকর্তার কাছে জানতে চান কেন তিনি র‌্যাবকে দিয়ে মদের চালান আটক করালেন। এ সময় তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয়।
এদিকে রাশেদুর রহমান থানায় জিডি করার দিন ২৪ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরে বিপুল পরিমাণ মদ বহনকারী আরও একটি কন্টেইনার পাওয়া যায়। পরদিন ২৫ জুলাইও বন্দরে ২ কন্টেইনার মদ পাওয়া যায়। সবমিলিয়ে মোট ৫টি মদের কন্টেইনার পাওয়া গেছে এ কয়েকদিনে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, ৫টি কন্টেইনারের সব মদই মিথ্যা ঘোষণায় বন্দর দিয়ে আমদানি করা হয়েছে।
কাস্টমসের নথিপত্র অনুযায়ী, জব্দকৃত চালানগুলো নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে অবস্থিত ডং জিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল (বিডি) কোম্পানি ও মংলা ইপিজেডে অবস্থিত ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ লিমিটেড, হ্যাশি টাইগার কোং লিমিটেড নামে চীন থেকে পলিয়েস্টার সুতা হিসেবে আমদানি করা হয়েছিল। কুমিল্লা ইপিজেডে ও বিএইচকে টেক্সটাইল লিমিটেড, ঈশ্বরদী ইপিজেডে অবস্থিত।