মঙ্গল শোভাযাত্রা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি

71

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
দিনব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ-১৪২৯ বঙ্গাব্দ ‘বাংলা নববর্ষ’ উদ্যাপন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বৈশাখী শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বলী খেলা, বউচি খেলা, মোরগ লড়াই ইত্যাদি। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ‘স্মরণ’ চত্বর থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখী শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা শেষে বর্ষবরণ মূল মঞ্চে (উন্মুক্ত মঞ্চ) অনুষ্ঠিত হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সূচিত হয়। অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করেন এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন কমিটির আহŸায়ক চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার এবং বৈশাখী উৎসবের সমাপনী বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে। স্বাগত বক্তব্য দেন উদ্যাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. শহিদুল ইসলাম।
উপাচার্য বলেন, বাংলা নববর্ষ বাঙালির চিরায়ত প্রাণের উৎসব। এ উৎসবে সকল ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষ ভেদাভেদ ভুলে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। সম্প্রীতির অটুট বন্ধন অধিকতর সুদৃঢ় করে বাঙালির এ প্রাণের উৎসব। অনুষ্ঠান শেষে উপাচার্য গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী আয়োজনসমূহে অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। বৈশাখী অনুষ্ঠানমালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, অনুষদ সমূহের ডিন, রেজিস্ট্রার, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, কলেজ পরিদর্শক, হলসমূহের প্রভোস্ট, বিভাগীয় সভাপতি এবং ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী প্রক্টর, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, অফিস প্রধান, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
চুয়েট
বর্ণিল আয়োজনে বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ উদ্যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। র‌্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ শিশু-কিশোররা অংশগ্রহণ করেন। র‌্যালিটি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক ও গোল চত্বর প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনে এসে শেষ হয়। এসময় চুয়েট মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর উপস্থিত সকলের সাথে কুশল বিনিময় এবং বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ এর শুভেচ্ছা জানান। পরে প্রশাসনিক ভবনের নিচে র‌্যালিত্তোর আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। বক্তব্য দেন পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. এম.এক. জিয়াউল হায়দার, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন, স্টাফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জামাল উদ্দীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। বৈশাখের অবিচ্ছেদ্য একটি অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। তাই আমাদের বাঙালি জাতীয়বাদের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করতে হবে।
ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি
বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে নানা আয়োজনে ইডিইউ পরিবার উদ্যাপন করেছে নতুন বছরের আগমন। ১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা ও বৈশাখী মেলা। আলপনা ও রঙ-বেরঙের অরিগ্যামিতে সাজানো ক্যাম্পাসে সকাল থেকেই ছিলো উৎসবের আমেজ। সকাল ১১টায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানমালার। এছাড়া গান, নাচ আর আবৃত্তিসহ আরো হরেক রকমের বিচিত্র আয়োজনে সারাদিনই মেতে ছিলো সবাই। ফ্যাকাল্টি ও শিক্ষার্থীরা একই মঞ্চে, একই সঙ্গে অংশ নিয়েছে নানা কার্যক্রমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সজল কান্তি বড়–য়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান। তিনি বাংলা সন প্রচলনের ইতিহাস টেনে এনে বলেন, মুঘল স¤্রাট আকবর বঙ্গাব্দের প্রচলন করেন। বাংলায় এই নতুন বছরের মানে হলো নতুন ফসল বোনা। অর্থাৎ বর্ষবরণের মূলত নতুন কিছু শুরুর উৎসব। জীবন ও যাপনে নতুনত্ব আনাই হলো এই উৎসবের অর্থ।
প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেন, বাংলা নববর্ষের প্রধান দিক হলো এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বিশ্বায়নের এই যুগে জাতিগত বিশেষত্ব ধরে রাখা যেখানে কঠিন হয়ে পড়ছে, সেখানে নিজেদের মৌলিকত্ব ধরে রাখতে আমাদের ঐতিহ্যকে আরো নিবিড়ভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অ্যাসোসিয়েট ডিন প্রফেসর ড. মো. নাজিম উদ্দিন, স্কুল অব বিজনেসের অ্যাসোসিয়েট ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রকিবুল কবির, স্কুল অব লিবারেল আর্টসের অ্যাসোসিয়েট ডিন মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, প্রক্টর মো. আসাদুজ্জামানসহ ফ্যাকাল্টি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
কাপাসগোলা চসিক বালিকা
উচ্চ বিদ্যালয়
নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ১৪ এপ্রিল সকালে অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রায় শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা ব্যানার ফেস্টুন সহকারে অংশ নেন। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন। সহকারি শিক্ষিকা কুমকুম চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত ও নৃত্যে অংশ নেন ছাত্রীরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক মমতাজ উদ্দিন, খন্দকার মো. নজরুল করিম, সাহেদা নাসরিন খান, জামশেদ আলম, উম্মে সালমা মোসলেমা বেগম, খালেদা বেগম, রিতা সিরাজী, ফারহানা রহমান, আরাফাতুন্নেছা, তাছলিমা বেগম, শুক্লা দাশ, নাজমুন নাহার প্রমুখ। এছাড়াও এ উপলক্ষে বিদ্যালয় ভবনের দ্বিতীয় তলায় বসে বিভিন্ন কাপড় ও খাবারের স্টল। বিজ্ঞপ্তি