মঙ্গলেও ছিল প্রাণ

49

আমাদের প্রতিবেশী গ্রহ মঙ্গলেও প্রাণ রয়েছে। এই তত্ত¡ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে দীর্ঘদিন। চলছে গবেষণাও। এই গবেষণা থেকেই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে নাসার বিজ্ঞানীরা। তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন, মঙ্গলেও লবণ ছিল, ছিল প্রাণ। সাত বছর ধরে মঙ্গলের ‘গেল ক্রেটার’ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে নাসার ‘কিওরিসিটি রোভার’ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।
পৃথিবীতে যেমন প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে, মঙ্গলেও তেমন প্রাণ ছিল। তার কারণ মঙ্গলে ছিল লবণজলের হ্রদ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জল শুকিয়ে যায় সেই হ্রদের। সেই হ্রদগুলি ক্রমেই ক্রেটার বা গহŸরে পরিণত হয়। বর্তমানে গবেষণা চালিয়ে নাসার বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, জল শুকিয়ে গেলেও হ্রদের হায়ে লবণের পুরু আস্তরণ রয়ে গেছে। মঙ্গলের ‘গেল ক্রেটার’ থেকে লবণের সেই আস্তরণই আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারপরই নাসা নিশ্চিত হয়েছে লালগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে।
এদিকে, কিওরিসিটি রোভার জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন বছর আগে ক্রেটারটি তৈরি হয়েছিল। চলতি সপ্তাহে নেচার জিও সায়েন্স জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। গবেষণার নেতৃত্বে ছিল কালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির একটি দল। এই দলই গেল ক্রেটার থেকে ১৫০ মিটার উচ্চতার পলল পাথর উদ্ধার করেছে। মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ এই পলল পাথরেই সালফেট জাতীয় লবনের আধিক্য ছিল বলে জানতে পারেন গবেষকরা। প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেটও ছিল ওই পাথরে। গহŸরের গায়ে লবণের পুরু ওই আস্তরণ দেখেই গবেষকরা মনে করছেন, মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ দিচ্ছে ওই লবণের আস্তরণ। বিজ্ঞানীরা জানান, হ্রদের জল যেখানে অগভীর ছিল, সেখানেই লবণ অধঃক্ষেপিত হয়েছে বেশি। পৃথিবীর সঙ্গে মঙ্গলের জলবায়ু বৈচিত্রের বিশেষ ফারাক নেই। তাই পৃথিবীর মতোই লবণ জলের হ্রদ শুকিয়েছে মঙ্গলেও। কীভাবে তা পরিবর্তিত হয়েছে, তা জানতেই গবেষণার জন্য গেল ক্রেটারকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। সূত্র : ইন্টারনেট

প্লাস্টিক বধের অস্ত্রের সন্ধান

পৃথিবীকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে বিশ্বজুড়ে নানা প্রচার চলছে। এরই মধ্যে প্লাস্টিক বধের সুখবর দিলেন ভারতীয় গবেষকরা। তাঁদের দাবি, উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডার জলাভূমি থেকে প্লাস্টিকনাশক দুটি ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেন খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা, যা প্লাস্টিক বর্জ্য সাফ করার পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা হয়ে উঠতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন দুটি পলিস্টাইরিনকে পচিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে। এরা হলো ‘এগজিগুয়োব্যাকটিরিয়াম সিবিরিকাম স্ট্রেন ডিআর১১’ ও ‘এগজিগুয়োব্যাকটিরিয়াম আনডি স্ট্রেন ডিআর১৪’।


ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন দুটি খুঁজে পেয়েছেন গ্রেটার নয়ডার শিব নাদর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। নেতৃত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব নোচারাল সায়েন্স’-এর জীববিজ্ঞান বিভাগের গবেষক রিচা প্রিয়দর্শিনী। এসংক্রান্ত গবেষণাপত্র ‘রয়াল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রি (আরএসসি) অ্যাডভান্সেস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রিয়দর্শিনী বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় পাওয়া তথ্য থেকে স্পষ্ট, প্লাস্টিকের রাসায়নিক গঠন ভাঙতে সক্ষম এগজিগুয়োব্যাকটিরিয়াম। ফলে প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য থেকে পরিবেশদূষণ রুখতে ভবিষ্যতে এদের ব্যবহার করা যেতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘জলাজমিগুলোতে অণুজীব বৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। যদিও ওই এলাকাগুলোকে নিয়ে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা হয়েছে সবচেয়ে কম। কিন্তু ভালো ব্যাকটেরিয়া খোঁজার জন্য এসব জলাজমিই আদর্শ জায়গা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রূপমঞ্জরী ঘোষের কথায়, ‘ক্যাম্পাসের মধ্যেই জলাজমি থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা থেকে যে তথ্য হাতে এসেছে, সেটা যুগান্তকারী আবিষ্কার। প্লাস্টিক-বধে সমাধান দিচ্ছে প্রকৃতিই।’ সূত্র : ইন্টারনেট