ভয়াবহ সুনামির ১৫ বছর

19

২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে ভয়ঙ্কর সেই সুনামি প্রাণ কেড়েছিল দুই লাখেরও বেশি মানুষের। ১৫ বছর পরও সেই ক্ষত বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কায় নিহতদের স্বজনেরা। ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ সুমাত্রায় ৯.১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত করলে ভয়াবহ এক সুনামির সূত্রপাত হয়। প্রায় ৩০ মিটার (১০০ ফুট) উচ্চতার ঢেউগুলো আছড়ে পড়ে ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন উপকূলে। বক্সিং ডেতে হওয়া সেই সুনামিতে এশিয়ার এসব দেশের প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা যান। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইন্দোনেশিয়ায় অনেক মানুষের খোঁজই মেলেনি আজও। শুধু দেশটির আচেহ রাজ্যেই মারা যান এক লাখ ২৫ হাজার মানুষ। সুনামির বিরাট সব ঢেউ আছড়ে পড়ে গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গিয়েছিল এ রাজ্যে। বান্ডা আচেহ শহরে সুনামির স্মরণে তৈরি করা হয় জাদুঘর। সেখানে হাজারো মানুষ বৃহস্পতিবার জড়ো হয়ে নিহতদের স্মরণ করেছেন। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বিরোন সমুদ্রসৈকতে জেলেরা জড়ো হয়ে প্রার্থনা করেছেন। নিহতদের সম্মানে এদিন সমুদ্রে মাছ ধরতে যাননি জেলেরা। সুনামিতে থাইল্যান্ডে মারা গেছেন পাঁচ হাজার তিনশ’ মানুষ। এদের মধ্যে আন্দামান সাগরের দ্বীপগুলোতে বেড়াতে আসা পর্যটকেরাও ছিলেন।
সুনামির পর ফুকেটসহ বিভিন্ন জায়গায় সুনামি ‘মেমোরিয়াল ওয়াল’ তৈরি করা হয়। বৃহস্পতিবার এসব দেয়ালের সামনে ও বিচগুলোতে মোমবাতি জ্বালিয়ে নিহতদের স্মরণ করা হয়। সুনামিতে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভজিরালংকর্ণের ভাগ্নে ২১ বছর বয়সে ভূমি জেনসেন মারা যান। তাকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়। ভারতে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যান। সেখানেও তাদের স্মরণে কর্মসূচি পালন করা হয়। শ্রীলঙ্কাতেও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের শহর গলে একটি স্মৃতিস্তম্ভে নিহতদের স্মরণে জড়ো হন অনেকে। দেশটির সবগুলো মন্ত্রণালয় দুই মিনিট নিরবতা পালন করে। এই দ্বীপরাষ্ট্রে ৩৫ হাজার মানুষ মারা যান। হিরোশিমাতে ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে ২৩ হাজার গুন বেশি শক্তি ছিল ২০০৪ সালে হওয়া এই ভূমিকম্প ও সুনামির।