ভ্যানে পণ্য বিক্রেতাদের শৃঙ্খলায় আনার উদ্যোগ

44

ভ্যানগাড়িতে পণ্য বিক্রেতাদের জন্য নতুন নীতিমালা করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। যত্রতত্র বাজার ও ভ্যানে পণ্য বিক্রির কারণে তীব্র যানজটের স্বীকার হতে হয় নগরবাসীকে। যানজট থেকে মুক্তি দিতে অবৈধ বাজার উচ্ছেদ ও ভ্যানে পণ্য বিক্রেতাদের মাঝে শৃঙ্খলা ফেরাতে এ নীতিমালা করা হচ্ছে। গতকাল চসিকের ৪২তম সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে নীতিমালা নয়, বাস্তবায়নই মূল চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন পূর্বদেশকে বলেন, নগরীর বিভিন্ন সড়কে যেখানে সেখানে বাজার বসছে। এসব অবৈধ বাজার উচ্ছেদ করা হবে। তাছাড়া রাস্তা দখল করে সারাদিন ভ্যানে পণ্য বিক্রি করছে ভাসমান হকাররা। সারাদিন রাস্তা দখল করার কারণে তীব্র যানজটের মুখোমুখি হতে হয় নগরবাসীকে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে হকার সরানো গেলেও ভ্যানের কারণে যানজট লেগেই থাকছে। তাই তাদের মাঝে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন নীতিমালা করা হবে। দিনের নির্দিষ্ট সময় ভাসমান হকাররা নির্দিষ্ট জায়গায় বসতে পারবেন। এছাড়া তাদের তালিকাও তৈরি করা হবে।
প্রসঙ্গত, চসিক মেয়রের উদ্যোগে ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে হকারদের জন্য প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী বিকাল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। পরে হকারদের তালিকাও তৈরি করেছিল সংস্থাটি। কিন্তু বাস্তবে কিছুদিন হকারদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলেও সময়ের ব্যবধানে আগের অবস্থায় ফিরে গেছে তারা। সারাদিন নগরীর বিভিন্ন ফুটপাত-রাস্তা দখল করে ব্যবসা করে যাচ্ছে হকাররা।
চসিক সূত্র জানায়, নগরীর যেসব স্থানে অবৈধ বাজার বসে এবং রাস্তাঘাট সহ জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভ্যানের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হয়, সেসব বিক্রেতাকে সময় নির্ধারণ করে দেয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের বাইরে পণ্য বেচাকেনা করতে দেয়া হবে না। এ জন্য তাদেরকে সময় নির্ধারণ ও পরিচয় পত্র দেয়া হবে। তাদের ভ্যানে পণ্যের তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে তালিকায় উল্লেখিত পণ্যের বাইরে কোন পণ্য বিক্রয় করতে পারবে না। ভ্যান হকারদের শৃঙ্খলায় আনতে সাধারণ সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নগর পরিকল্পনাবিদ ড. ইদ্রিস আলী পূর্বদেশকে বলেন, মেয়র ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে এ উদ্যোগ যেন ব্যর্থতায় পর্যবসিত না হয়। পূর্বে হকারদের শৃঙ্খলায় আনতে যে নীতিমালা করা হয়েছিল, তা বাস্তবে কতটুকু প্রয়োগ হয়েছে-সেটা আমার নগরীতে হাঁটলেই বুঝতে পারি। ভাসমান হকারদের শৃঙ্খলায় আনতে শুধু নীতিমালা করলেই হবে না, নজরদারিও থাকতে হবে। পদক্ষেপটা যদি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে, তাহলে নগরবাসীর কোনো উপকারে আসবে না।