ভোট পাবে না বলে বিএনপি সরকার উৎখাত করতে চায়: শেখ হাসিনা

40

পূর্বদেশ অনলাইন
ভোট পাবে না বলে বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ নিয়ে কিছু দিন কষ্ট হয়েছিল। ভবিষ্যতে আর হবে না ইনশাল্লাহ। তবে আপনাদের কাছে অনুরোধ, সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করতে হবে। আপনারা জানেন না, এই শীতকালে ইউরোপের ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের কী অবস্থা। তারা মানুষ গরম পানি পাচ্ছে না। তারা রুম হিট করতে পারছে না না। এক রুমের মধ্যে সমস্ত পরিবার নিয়ে থাকতে হচ্ছে। দোকানে গেলে জিনিস কিনতে পারে না। হয়তো এক প্যাকেট জিনিসের বেশি একটি পরিবার কিনতে পারবে না। এমন অবস্থা তাদের। আমি বলতে চাই, বাংলাদেশে এই অবস্থা হবে না। আমরা মানুষের সবরকম সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখবো কিন্তু আপনাদের সহযোগিতা চাই।’ রবিবার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ করোনার সময় আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে। কাজেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখনও পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে মজবুত। সারা বিশ্বব্যাপী এখন খাদ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের অভাব। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আমাদের দেশের মানুষ যাতে ভালো থাকে।’ জনসভায় উপস্থিত জনতাকে হাত তুলে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। জামায়াত-বিএনপিকে দেশের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জিয়াউর রহমান যেমন জাতির পিতাকে হত্যা করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিল। ওদের ধারণা ওইভাবেই তারা ক্ষমতায় যাবে।গণতান্ত্রিক ধারা তারা পছন্দ করে না। শেখ হাসিনা বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সেই ১০ ডিসেম্বর বিএনপির খুব প্রিয় একটা তারিখ। বোধ হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পদলেহনের দোসর ছিল বলেই ১০ ডিসেম্বর তারা ঢাকা শহর নাকি দখল করবে। আর আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে। তিনি বলেন, আমি তাদের বলে দিতে চাই, খালেদা জিয়া ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল। আর ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বলেই তাকে বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয়নি। সারা বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছিল। জনতার মঞ্চ করেছিলাম আমরা। খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। দেড় মাসও যায়নি, খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। সে কথা বিএনপির মনে রাখা উচিত। জনগণের ভোট যদি কেউ চুরি করে বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না। ওরা তা ভুলে গেছে।বিএনপি-জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধীরা যাতে আর ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাদের আন্দোলন, তাদের আন্দোলন হচ্ছে মানুষ খুন করা। বিএনপির দুইটা গুণ আছে, ভোট চুরি আর মানুষ খুন; ওইটা পারে। ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে বিএনপির আন্দোলনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা, মানুষকে অগ্নি দগ্ধ করার জবাব একদিন খালেদা জিয়া-তারেক জিয়াকে দিতে হবে, এর হিসেব একদিন জনগণ নেবে। রিজার্ভ এবং ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটা গুজব ছড়ানো হচ্ছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি আমি, আর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অপপ্রচার করছে। অথচ এই কয়েক দিনে যারা টাকা তুলতে গেছে তারা সবাই তো টাকা তুলতে পেরেছে।মানুষকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে আমার, একটা কথা আছে আপনি ব্যাংকে টাকা রাখবেন, না আপনি খাটের নিচে, বালিশের নিচে না আলমারিতে রাখবেন; চোরেও তো নিয়ে যেতে পারে। গুজবে মানুষ বিভ্রান্ত হয় টাকা তুলে ঘরে আনে, চোরেও নিতে পারে, আবার টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা রাখে। এই যে মানুষকে বিভ্রান্ত করা। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে চোরের সখ্যতা আছে কিনা এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই যে মানুষের সর্বনাশ করা এটাই কি বিএনপি-জামায়াত শিবিরের কাজ। নাকি তাদের সাথে চোরের সখ্যতা আছে, চোরকে চুরি করার সুযোগ করে দেওয়া। আপনারা ভোট দিয়ে আবারও আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করবেন। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন। আপনারাই আমার পরিবার, আপনারাই আমার সব।’