ভোটে ‘এসিড টেস্টে উত্তীর্ণ’ বাংলাদেশ

45

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তিকে রুখে দিয়ে বাংলাদেশ ‘এসিড টেস্টে উত্তীর্ণ’ হয়েছে বলে মন্তব্য এসেছে রাজধানীর এক গোলটেবিল আলোচনা থেকে। ভোটের পর গতকাল শনিবার ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’র আয়োজনে এই আলোচনা হয়। সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সম্প্রীতির নির্বাচন, নতুন সরকার ও আগামী দিনের প্রত্যাশা’ শিরোনামের এই সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতিকর্মী পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।-খবর বিডিনিউজের
শুরুতে পীযূষ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা ঘুরেছি। আমরা চেয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, মানবিক দর্শনের মানুষ এবারের নির্বাচনে জঙ্গিবাদী- সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দেয়। আমরা এবারের নির্বাচনে তা পেয়েছি।’
বৈঠকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে সব চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রকে পরাজিত করে এক এসিড টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। যারা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে, তার বিরোধী রাজনীতি করে, তাদের সেই রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ।’
এবারের নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ নিয়েও
এই সভায় আলোচনা হয়।
মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘নির্বাচনে বিএনপি যে প্রার্থী তালিকা প্রণয়ন করেছিল, তা আইএসআই মনোনীত ও লন্ডন থেকে অনুমোদিত।’
তিনি ২৮৮টি আসনে বিশাল জয়ে ‘আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই’ জানিয়ে তিনি সতর্ক করে দেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের পঁচাত্তরের কথা ভুলে গেলে চলবে না। দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীরা, ষড়যন্ত্রকারীরা যে কোনো সময় আঘাত হানতে পারে। পঁচাত্তরের পর এরা বাংলাদেশে কলুষিত রাজনীতি শুরু করেছিল। আমাদের চ্যালেঞ্জ হল, এদের কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা।’
সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি নতুন সরকারকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান এসেছে এই সভা থেকে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতি হয়ত পুরোপুরিভাবে সমূলে উৎপাটন করা সম্ভব হবে না। তবে এটাকে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। না হলে সুশাসন নিশ্চিৎ করা যাবে না।’
আলোচনায় যোগ দিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য মাহফুজা খানম ঘোষিত ইশতেহার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে নতুন সরকারকে অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম কথায় বলব, ইশতেহারের প্রতিটি জিনিস এটার জন্য মনিটরিং টিম, চেক আউট লিস্ট থাকতে হবে। ৫০ দিনের কাজ, ১০০ দিনের কাজ সব ঠিক করে নিতে হবে।’
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগকে নিয়ন্ত্রণ করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ, যুবলীগের নাম ধরেই বলব এদের ছেড়ে দিলে চলবে না। এদের কন্ট্রোল করা প্রয়োজন। আমি চাই, তারা মানুষ হোক। তারা অন্তত বিবেকবান মানুষ হোক।’
একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের পাশাপাশি নারী, শিশু ও যুব নীতি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের অনুরোধও করেন তিনি।
আলোচনা সভায় যোগ দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবির, মানবাধিকারকর্মী অ্যারোমা দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অসীম কুমার সরকার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সাংবাদিক রহমান মুস্তাফিজ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান লালটু।