ভোক্তাঋণের সুদহার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারবে ব্যাংকগুলো

9

ঢাকা প্রতিনিধি

মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভোক্তাঋণের সর্বোচ্চ সুদের হারের নীতি শিথিল করেছে। ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বর্তমান পর্যায় থেকে উর্ধ্বে ৩ শতাংশ পয়েন্ট পর্যন্ত সুদের হার বাড়াতে পারবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন মুদ্রানীতি অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো এখন চাইলে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদে ভোক্তা ঋণ দিতে পারবে। এতদিন এ ক্ষেত্রে সুদের সর্বোচ্চ হার ছিল ৯ শতাংশ।
সেই সঙ্গে আমানতের সুদ হারের সীমা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদের হারের নীতি বজায় রেখেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) ঘোষিত মুদ্রানীতিতে এ তথ্য জানানো হয়। গতকাল রোববার অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রেপো সুদ হার বিদ্যমান বার্ষিক শতকরা ৫ দশমিক ৭৫ ভাগ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে শতকরা ৬ ভাগে পুনঃনির্ধারণ করা হলো। রিভার্স রেপো সুদহার বিদ্যমান বার্ষিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪.২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
নতুন মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার পুরোপুরি তুলে নেওয়া হলো। এ ছাড়া নতুন মুদ্রানীতিতে ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়ানোরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ভোক্তাঋণের ক্ষেত্রে সুদহার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। বর্তমানে ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে রাখা হয়েছে। এখন সেখানে ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়িয়ে ১২ শতাংশ পর্যন্ত করতে পারবে ব্যাংকগুলো। এর ফলে ব্যাংকগুলো এখন ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়াতে পারবে। তবে শিল্পঋণসহ অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, অন্যান্য ঋণের বেঁধে দেওয়া সুদহার তুলে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন থাকবে।
নতুন মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আমানতের সুদহার উন্মুক্ত করে দেওয়া ও ঋণ সুদহারে কিছুটা শিথিল করায় তা আমানতের সুদহার বাড়াতে সহায়তা করবে।
এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, তিন মাস ও তার বেশি মেয়াদি আমানতের সুদ কোনোভাবেই তিন মাসের গড় মূল্যস্ফীতির কম হতে পারবে না। ২০২০ সালের এপ্রিলে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়ার পর আমানতের সুদহার আড়াই শতাংশেও নামিয়ে এনেছিল।
বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি যেখানে উঠেছে, তাতে ব্যাংকগুলোকে আমানতের সুদহারও বাড়াতে হয়। কিন্তু ঋণের সুদ নির্দিষ্ট থাকায় ঋণ ও আমানতের সুদের মধ্যে সমন্বয় করতে গিয়ে ব্যাংকগুলোকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এ জন্য ব্যাংকগুলো ঋণ ও আমানতের সুদহার তুলে নেওয়ার দাবি করে আসছিল।