ভিডিও ফুটেজে সাত হামলাকারী শনাক্ত

113

নগরীর এমইএস কলেজের সামনে দিনদুপুরে স্কুলছাত্র জাকির হোসেন সানির ওপর হামলা ও ছুরিকাঘাতকারী অন্তত সাতজনকে সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের পর তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করে এই সাতজনকে শনাক্ত করেছে। যদিও সানির ওপর হামলাকারীরা সংঘবদ্ধভাবে ১০ থেকে ১৫ জন ছিল। এদের মধ্যে দু’জনকে ঘটনার পরপরই আটক করা হয়। শীঘ্রই বাকিদের গ্রেপ্তারে সক্ষম হবে বলেও আশা করছে পুলিশ।
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নিহতের বোন মাহমুদা আক্তার বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে নগরীর খুলশী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন, সৌরভ ঘোষ (২০), সৈয়দ সাফাত কায়সার (১৯), রবিউল (১৯), তুষার (২২), আনিসুর রহমান (৩০), আয়াতুল হক (২০) ও মো. মামুন (৩০)। এর বাইরে আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমরা হত্যাকান্ডে জড়িত কয়েকজনকে ইতিমধ্যে শনাক্ত করেছি। এর মধ্যে সৌরভ ও সাফাতকে ঘটনার পরপরই আটক করা হয়েছে। তাদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যেকোনও সময় তাদের গ্রেপ্তারের খবর হয়তো আপনাদের দিতে পারব।’ হত্যাকান্ডের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় আধিপত্য নিয়ে আগেরদিনও ভিকটিমের সাথে প্রতিপক্ষের হাতাহাতি ও ধাওয়ার তথ্য আমরা পেয়েছি। আবার প্রেমঘটিত একটি বিষয়ও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। আমরা সবদিক বিবেচনায় রেখেই কাজ করছি। জড়িতরা গ্রেপ্তার হলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
পুলিশ বলছে, স্কুলছাত্র জাকির হোসেন সানি হত্যায় জড়িতরা সবাই এমইএস কলেজকেন্দ্রিক ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। নিহত সানির দুই বন্ধুকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তারা ঘটনার দিন সানিকে বাসা থেকে ডেকে আনে বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সানির সহপাঠীরা খুলশী থানার সামনে ঘাতকদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে।
এমইএস কলেজ গেটের সামনের সিসিটিভি থেকে পাওয়া ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকান্ডের সময় ১০-১২ জন যুবক সানিকে ঘিরে ধরেছিল। তাদের মধ্যে কেউ একজন ‘স্যরি বল’, ‘স্যরি বল’ বলছিল তাকে। এসময় আরেকজন সানির উরু ও হাঁটুতে ছুরিকাঘাত করে। সানি পালাতে চাইলে আরেকজন তার পিঠে ছুরিকাঘাত করে। এরপর সে সড়কের ওপর লুটিয়ে পড়ে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই সানির মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, নিহত জাকির হোসেন সানি ঢাকার একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার কলাপাড়ায়। সিআইডি পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন তার দুলাভাই। একসময় তার বাসায় থেকে লেখাপড়া করলেও বছরখানেক আগে ঢাকায় বড় ভাইয়ের বাসায় গিয়ে সেখানেই একটি স্কুলে ভর্তি হয় সানি। কোরবানির ঈদের আগে বোনের বাসায় বেড়াতে এসেছিল। গত ২৬ আগস্ট রাতে ট্রেনে তার ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দুপুরেই প্রাণ হারাতে হয় তাকে।