ভিডিও ছড়ানোর হুমকি দিয়েই ধর্ষণ করা হতো

10

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাঁশখালী হাসপাতালে শিশু জন্ম দিয়ে মা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে মামলাটি দায়ের করেন ধর্ষণের শিকার মহিলা। এর আগে ধর্ষিতার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি তদন্ত করেন বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম।
তিনি ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ ও স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে কথা বলেন। উত্তর জলদী বড়ুয়া পাড়ার সমরজিৎ বড়ুয়া প্রকাশ খোকন নামে এক ব্যক্তি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন ওই গৃহবধূ। যে কারণে উমেশ চন্দ্র বড়ুয়ার সন্তান খোকনকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। ঘটনার পর থেকে খোকন পলাতক আছেন।
বাঁশখালী থানার ওসি মো. শফিউল কবীর পূর্বদেশকে বলেন, ‘তদন্ত শেষে মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলায় খোকন নামে একজনকে আসামি করা হয়েছে। আজ (গতকাল) ভিকটিমের মেডিক্যাল করা হয়েছে। এখন আসামি ধরতে পারলে নবজাতক শিশু ও আসামির ডিএনএ টেস্ট করা হবে। আসামি ধরতে আমাদের চেষ্টা চলছে।’
এর আগে পুলিশ ওই মহিলাকে শনাক্ত করলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। সামাজিক মীমাংসায় নবজাতক শিশু কন্যাকে একজনের কাছে দত্তক হিসেবে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনার সপ্তাহ পরও মামলা না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করতে থাকে। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলও ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। পুলিশ তদন্ত করে শেষতক মামলাটি গ্রহণ করেন।
ধর্ষিতার দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামি খোকনের কাছ থেকে ৩৬ হাজার টাকা ঋণ নেন ওই গৃহবধু। ঋণ নেওয়ার সূত্র ধরে বিভিন্ন সময় আসামি খোকন নিজের দোকানে ও ওই মহিলার বাড়িতে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করা আছে জানিয়ে খোকন মহিলাকে বিষয়টি গোপন রাখার কথা বলেন। অন্যথায় ভিডিও এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ৮-১০ বার ধর্ষণ করেন খোকন। পরে মেয়েটি গর্ভবর্তী হলে বাচ্চা নষ্ট করার হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক জানায় বাচ্চাটি নষ্ট করতে গেলে প্রাণহানির আশঙ্কা আছে। যে কারণে গত ১ আগস্ট রাতে হাসপাতালে শিশুটি জন্ম দিয়ে পালিয়ে যান ওই মহিলা।
পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তপন কান্তি বড়ুয়া পূর্বদেশকে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের কাছে বিভিন্ন তথ্য জানতে চেয়েছে। আমি শিশুটি জন্মের পর থেকে যা শুনেছি পুলিশকে তা জানিয়েছি। মেয়েটি জানিয়েছেন খোকন ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এখন প্রকৃতপক্ষে খোকন ঘটনার সাথে জড়িত কিনা, তা বের করার দায়িত্ব পুলিশের। আমরা চাই মেয়েটি যাতে ন্যায়বিচার পায়।’