ভিটেবাড়ি পাবে আরও ৯৮৮ পরিবার

18

রাহুল দাশ নয়ন

পারিবারিক কল্যাণে এবং সামাজিক উন্নয়নের অনন্য দৃষ্টান্ত ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’। দারিদ্র্য বিমোচনে ‘শেখ হাসিনা মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এ প্রকল্পের অধীনে চতুর্থ পর্যায়ে চট্টগ্রামের দশ উপজেলায় আরও ৯৮৮টি নতুন ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ঘরগুলো নির্মাণ করে বুঝিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রামের পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল।
চট্টগ্রামের জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম জেলায় পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ১১ উপজেলায় যারা গৃহহীন ও ভূমিহীন রয়েছেন তাদের প্রত্যেককে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জমিসহ ঘর দেওয়া হবে। বর্তমানে চতুর্থ ধাপে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঘরগুলোর নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। আপাতত সর্বশেষ যে তালিকা ছিল, সে তালিকা অনুযায়ী গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের অংশ হিসেবে কোনো উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। সে পরিকল্পনা নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চতুর্থ ধাপে চট্টগ্রামে ৯৮৮টি পরিবার নতুন ঘর পাবে। এরমধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় ৬১টি, বোয়ালখালীতে ৫৩টি, চন্দনাইশে ৭৫৮টি, বাঁশখালীতে ১২০টি, হাটহাজারীতে ১২০টি, ফটিকছড়িতে ২০০টি, আনোয়ারায় ৭৫টি, মিরসরাইয়ে ১২০টি, সীতাকুন্ডে ৩০টি ও রাউজানে ১৩৪টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে দুই লক্ষ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলায় ১ম পর্যায়ে এক হাজার ৪৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে ২য় পর্যায়ে চট্টগ্রাম জেলায় ৬৪৯টি পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে চট্টগ্রাম জেলায় ১২০টি ঘর নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ১ম ও ২য় পর্যায়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী ৩য় পর্যায়ে গত ২৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলায় এক হাজার ২১৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সারাদেশে ২০২১ সালের ২১জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯১টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩৩০টি, তৃতীয় পর্যায়ে ৯৮ হাজার ৫৭৮টি পরিবারকে গৃহ প্রদান করা হয়।
ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা, আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ এই তিনটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে ধারণ করে আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, চা শ্রমিক, ভূমিহীন কৃষক, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী, জলবায়ু উদ্বাস্তু, পরিবেশগত শরণার্থী, প্রতিবন্ধী, খনি শ্রমিক, কুষ্ঠ রোগী এবং অতি দরিদ্র নারীরা এ কর্মসূচির প্রধান উপকারভোগী।