ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল শিশুর মৃত্যুর হার হ্রাস করে

45

সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম জেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২০। গত ১১ জানুয়ারি কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাইয়ে দিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ের ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামছুল তাবরীজের সভাপতিত্বে ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক অলক দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনসালট্যান্ট ডা. সুরজিৎ ঘোষ, ইউনিসেফের বিভাগীয় নিউট্রিশন অফিসার ডা. উবা সুই চৌধুরী ও ওর্য়াল্ড ভিশনের প্রোগ্রাম অফিসার খ্রিষ্টপার খুই। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা স্বাস্থ্য তত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জহরলাল পাল ও স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মনোয়ারা বেগম। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও পুষ্টি সেবার বাস্তবায়নে ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, এবার জেলার ১৪ টি উপজেলার ২শ ইউনিয়নের ৬শ ওয়ার্ড, ১৫টি স্থায়ী কেন্দ্র, ১৫টি ভ্রাম্যমান কেন্দ্র ও ৪ হাজার ৮শ অস্থায়ী কেন্দে সকাল ৮টাথেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৪৮৬ জন শিশুকে নীল ও লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তন্মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ৮৫ হাজার ৮৯ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৬ লাখ ৮০ হাজার ৩৯৭ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানো হবে। উপজেলাগুলোতে ৫১ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ১৫৬ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ৫৫৯ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ৬৮৬ জন পঃ পঃ সহকারী, ১৫৩ জন প. প. পরিদর্শক, ৯ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ১৫ জন স্যানিটারী ইন্সপেক্টর, ৫১৭ জন সিএইচসিপি ও ৮৪ জন স্যাকমো নিয়োজিত রয়েছেন। সিভিল সার্জন আরো বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরণের মৃত্যুর হার হ্রাস করে। কোন শিশু যাতে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাসসুল খাওয়া থেকে বাদ না পড়ে সে লক্ষ্যে জেলার প্রত্যেক উপজেলা সদরসহ সর্বত্র মাইকিং করে জনগণকে জানান দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মসজিদ, হাটবাজার, বাস স্ট্যান্ড, নৌ-ঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণস্থানেও ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। সরকারী প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, আনসার-ভিডিপি ও এনজিও সংস্থাগুলো ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের যে কোন ধরণের অপপ্রচার ও গুজব রোধে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের তিনটি টিম ও ৩য় একটি টিম ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন মনিটরিং করছেন। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমেও এ কার্যক্রম মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য তত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া জানান, ২০১৯ সালের ২২ জুন অনুষ্টিত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬-১১ মাস বয়সী মোট ৮৪ হাজার ৫০৭ জন শিশুর মধ্যে ৮৩ হাজার ৭০৩ জন কে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল, যার অর্জিত হার ছিল ৯৯ শতাংশ এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী মোট ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৭৩৫ জন শিশুর মধ্যে ৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬৩ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল, যার অর্জিত হার ছিল ৯৯.৯৮ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তি
সেবা ফাউন্ডেশন : সকাল ৮ টা হইতে ৪ টা পর্যন্ত সেবা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গত ১১ জানুয়ারি বিভিন্ন জায়গায় ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের নীল রঙের ক্যাপসুল এবং ১২ মাস হইতে ৫৯ মাস পর্যন্ত প্রতিটি শিশুকে একটি করে লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। উক্ত কর্মসুচির শুভ উদ্বোধন করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ডা. আর কে রুবেল। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে অভিভাবকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে প্রত্যেক পিতা-মাতারই কর্তব্য স্ব-স্ব কেন্দ্রে গিয়ে ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো। ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাপসুল শিশু অন্ধত্ব ও মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। পাশাপাশি সকল প্রকার শিশুদেরকে টিকা দেওয়ার আহব্বান জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, এ কে এম আবু ইউসুফ, ডাঃ অপূর্ব ধর, ডা. এস.কে পাল সুজন, প্রণব মজুমদার, তারক সরকার, মোহাম্মদ এয়াকুব, শিল্পী সমীরন পাল প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি