‘ভিআইপি’ টাওয়ারে ‘মধ্যবিত্তের’ ভিড়

34

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর অন্যতম শপিং মল ভিআইপি টাওয়ার। নামে ভিআইপিদের মার্কেট হলেও এই মার্কেটে মধ্যবিত্তদের আনাগোনা বেশি। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশি-বিদেশি বাহারি পোশাক সামগ্রীর পসরা সাজিয়েছেন এই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তবে পণ্যের মজুদ অনুপাতে আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। অবশ্য ২০ রমজানের বিক্রি বাড়ার আশা করছেন তারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মার্কেটটিতে শাড়ি, থ্রি-পিস লেহেঙ্গা, শার্ট, প্যান্ট পাঞ্জাবিসহ শিশুদের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতার শো-রুম রয়েছে। দেশীয় পোশাকের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আমদানি করা নানা ডিজাইনের পোশাক সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে। তবে অন্যান্য বছরের ন্যায় ক্রেতা আকর্ষণের জন্য কোনো ধরনের বিশেষ অফারের সুযোগ রাখা হয় নি। পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি তেমন একটা দেখা যায়নি মার্কেটে। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে নিরপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী রয়েছেন। পার্কিং স্পটে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।
ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার কারণে গত দুই বছর ব্যবসা হয়নি। এ বছর রোজা শুরুর আগে ঢাকা থেকে প্রচুর পোশাক এনে মজুদ করেছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তান থেকেও পোশাক আমদানি করা হয়েছে। তবে রোজার শুরুতে বিক্রি থাকলেও ১০ রমজানের পর তা কমে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, এখনও বেতন না পাওয়ায় অনেকে শপিংয়ে আসছেন না। ফুটপাতের ভাসমান ব্যবসায়ীদের কারণেও বিক্রি কম হচ্ছে বলে দাবি করছেন তারা।
ফ্যাশন লেডি হাউসের ব্যবস্থাপক পূর্বদেশকে জানান, আমরা মূলত পাইকারিতে পোশাক বিক্রি করি। ঈদ উপলক্ষে খুচরাও বিক্রি করছি। কিন্তু ১৫ রমজান শেষেও আশানুরূপ ক্রেতার দেখা পাচ্ছি না। আমাদের দোকানে মূলত লেডিস পোশাক রয়েছে। আমরা ঢাকার পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তান থেকে মেয়েদের থ্রি-পিস ও কুর্তি আমদানি করেছি। এসব পণ্যের দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ফুটপাতের দোকানে একটি পোশাক ৪০০ টাকায় পাওয়া গেলে ক্রেতারা আমাদের কাছ থেকে ৮০০ টাকায় কিনবে না। ক্রেতারা মানের চেয়ে দামটাই বেশি দেখেন। পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানে কোনো ভাড়া দিতে হয় না। তাই তারা আমাদের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারেন।
আর্টিস্টি ফ্যাশনের ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, রোজার আগেও অনেক ক্রেতা শপিং করেছেন। মূলত যারা নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন তারা আগেই শপিং করে নিয়েছেন। সাধারণত ১৫ রমজানের পর ঈদ বাজারে বিক্রি বেশি থাকে। এ বছর চিত্র ভিন্ন। বিক্রি বাড়ার বদলে উল্টো কমে গেছে। আমরা আশা করছি ২০ রমজানের পর বিক্রি বাড়তে পারে। ঈদ উপলক্ষে অনেক মার্কেটে ডিসকাউন্ট দিচ্ছে। কিন্তু ডিসকাউন্টে উল্টো ক্রেতারা ঠকে। ২ হাজার টাকার জিনিসকে ৩ হাজার টাকা দাম দিয়ে ২০ শতাংশ ডিসকাউন্ট দেয়। এতে ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। আমাদের এখানে ডিসকাউন্ট না থাকায় ক্রেতারা সঠিক দামে পণ্য কিনতে পারছেন।
ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের কেনাকাটার বিষয় বিবেচনা করে নানা উদ্যোগ নিয়েছে ভিআইপি টাওয়ার ব্যবসায়ী সমিতি। সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার চৌধুরী পূর্বদেশকে জানান, ভিআইপি টাওয়ার মূলত মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের মার্কেট। এখানে ক্রেতারা কম দামে প্রয়োজনীয় পোশাক সামগ্রী ক্রয় করতে পারেন। আমরা ক্রেতাদের সেবা করছি। ঈদকে সামনে রেখে মার্কেটের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে। পুরো মার্কেট সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। তবে এখনও আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা হতাশ বলে জানান তিনি। সামনের দিনগুলোতে এ খরা কাটিয়ে উঠবে বলেও আশা তাদের।