ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির কথা বলে স্কুলছাত্রীকে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ

6

হাটহাজারী প্রতিনিধি

সুবর্ণা চৌধুরী (ছদ্মনাম), বয়স ১৩ বছর। এ কিশোরী টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইলের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। গত ৩১ জুলাই এলাকার সাদিয়া আক্তার রুনা নামে এক নারী সুবর্ণাকে মুঠোফোনে বলেন, চট্টগ্রামে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সেখানে আরও দুই জন মেয়ে পড়াশোনা করে, তুমি আসলে ভাল পড়াশোনা করতে পারবে। এ প্রলোভনে ওই ছাত্রীকে চট্টগ্রামে এনে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ করা হয়। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর থানাধীন আগ্রাবাদ ছোটপুল এলাকায়। গত শনিবার বিকেলে এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার এবং ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে র‌্যাব-৭ এর হাটহাজারী ক্যাম্পের সদস্যরা।
গ্রেপ্তারকৃতরা রুনা (১৯) টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার দক্ষিণ পাড়া গ্রামের ধলা মিয়ার কন্যা এবং মো. ফরিদ (২৮) ল²ীপুর জেলার কমলনগর থানার উত্তর চর মার্টিন গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদ পুত্র। রুনা ও ফরিদ ছোটপুল এলাকার একটি টিনশেডের ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করতেন।
গতকাল রবিবার দুপুরে দুই অপরাধীকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুর রহমান।
তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা মানবপাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্নভাবে সহজ-সরল অভাবগ্রস্ত নারী ও শিশুদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে, অর্থ উর্পাজনের জন্য পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে।
তিরি আরও জানান, গত ১ আগস্ট সকালে সুবর্ণা পরিবারের কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে ঘাটাইল থেকে চট্টগ্রামের হালিশহর চলে আসে। রুনার কথামতো ফরিদের সাথে ভাড়া বাসায় উঠে। তখন ওই ছাত্রী ঘরে অন্যকোন মেয়েকে দেখতে না পেয়ে প্রশ্ন করলে ফরিদ এলোমেলো কথা বলতে থাকে। এরপর সুবর্ণা বাড়ি ফিরে যেতে চাইলে রুনা নিষেধ করে এবং তার টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। এর মধ্যে রাতে সুবর্ণাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ফরিদ। তখন সুবর্ণা বটি দিয়ে ধাওয়া করলে ফরিদ পালিয়ে যায়।
এদিকে সুবর্ণাকে কোথাও না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানায় জিডি করেন। পরে জানতে পারেন, তাকে চট্টগ্রাম শহরে কতিপয় অপরাধী আটকে রেখেছে। বিষয়টি র‌্যাব-৭ এর হাটহাজারী ক্যাম্পের সদস্যরা অবগত হয়ে হালিশহর থানাধীন আগ্রাবাদ ছোটপুল এলাকা থেকে রুনা ও ফরিদকে গ্রেপ্তার করে।