ভারত-বাংলাদেশ পর্যটকবাহী নৌযান চালু হচ্ছে মার্চে

54

আগামী মার্চে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পর্যটকবাহী নৌযান চালু হবে। এতে উভয় দেশের পর্যটকরা নৌপথে ভ্রমণ করতে পারবেন। সাংবাদিকদের এই সুখবর দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল রবিবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মতবিনিময় করেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।
ভারতের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পর্যটকবাহী নৌযান চালু হবে। প্রথমে ভারতের পর্যটক দল নৌপথে বাংলাদেশের সুন্দরবন ভ্রমণ করবে।’ খবর বাংলা ট্রিবিউনের
বাণিজ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে জটিলতা নিরসনের জন্য ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ভারতের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশিদের ভিসা সহজ করতে রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন স্থানে ১৫টি ভিসাকেন্দ্র চালু করেছে ভারত।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। দিনাজপুরের চিলাহাটি সীমান্তে একটি স্থলবন্দর নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তাব দিয়েছে। চলমান বর্ডার হাটের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আমরা উভয় দেশ একমত হয়েছি। চলমান বর্ডার হাটের পাশাপাশি আরও ছয়টি বর্ডারহাট চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
ভারতের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত আশ্বাস দিয়েছেন, চলমান বর্ডার হাটের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা দ্রæত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ সময় আরও ছিলেন বাণিজ্যসচিব মো. মফিজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মো. শফিকুল ইসলাম।
এদিকে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের নিয়ে মোংলা বন্দরে নোঙর করেছে বিলাসবহুল ভ্রমণতরী ‘সিলভার ডিসকোভারার’। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে বেড়াতে এসেছেন তারা। গতকাল রবিবার দুপুর আড়াইটায় বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে এসে পৌঁছে এটি। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার নুরুল হুদা এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বন্দরে নোঙর করা এই জাহাজে চড়ে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের ৫৩ জন পর্যটক এসেছেন। তাদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে বলে জানান মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার। তিনি বলেন, ‘ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ঘুরতে ইমিগ্রেশনের জন্য বন্দরের জেটিতে নোঙর করেছে এই জাহাজ। আন্তর্জাতিক পর্যটকরা এখানে দুই থেকে তিন ঘণ্টা অবস্থান করবেন। এরপর আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনের ঢাংমারী, চরাপুটিয়া, আলোরকল, হারবাড়িয়া, করমজল, হিরণ পয়েন্ট, কটকা, কচিখালী ও দুবলা ভ্রমণ করবে ক্রুজশিপটি।’
বন্দরের এই পদস্থ কর্মকর্তা আরও জানান, ভারতের চেন্নাই থেকে আসা জাহাজটি আগামী ৩১ জানুয়ারি মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনের উদ্দেশে সুন্দরবন ছেড়ে যাবে। ওইদিন মহেশখালীতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য থাকবে জেলেদের গ্রাম, রাখাইন সম্প্রদায়ের নাচ, গানের আয়োজন।
বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের ট্যুর অপারেটর ছাড়াও জাহাজটি পরিচালনার দায়িত্বে আছে ডেনমার্কের পাগমার্ক। যৌথ এই আয়োজনে অংশীদার বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটর জার্নি প্লাস। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী তৌফিক রহমান জানিয়েছেন, ইয়াঙ্গুন থেকে ফের বাংলাদেশ হয়ে চেন্নাই ফিরে যাবে ‘সিলভার ডিসকোভারার’।
জানা গেছে, ‘সিলভার ডিসকোভারার’ ভ্রমণে প্রত্যেক পর্যটকের খরচ হচ্ছে ২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। সুইমিং পুল, বারসহ আধুনিক হোটেলের সব সুবিধা রয়েছে এই জাহাজে। ২০১৭ সালে জাহাজটি ১৭টি দেশের পর্যটক নিয়ে দু’বার বাংলাদেশে এসেছিল।