ভারত থেকে কেনা ৫০ লাখ টিকা এলো দেশে

39

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারিভাবে কেনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছেছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইট টিকার চালান নিয়ে গতকাল সোমবার বেলা সোয়া ১১ টার দিকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এই টিকা আনা হচ্ছে বাংলাদেশে সেরাম ইনস্টিটিউটের ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে। টিকার বাক্স টঙ্গীতে বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউজে নিয়ে যাওয়ার জন্য আগেই নয়টি ফ্রিজার ভ্যান বিমানবন্দরে প্রস্তুত ছিল।
এ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেরাম ইনস্টিটিউট আমাদের প্রতিশ্রূতি দিয়েছিল ২১ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসবে। সেই প্রতিশ্রূতি অনুযায়ী পাঠানো ৫০ লাখ ডোজ টিকা আমরা আজ গ্রহণ করলাম। এটাকে আমরা এখন নিয়ে যাব টঙ্গীতে আমাদের নতুন ওয়্যারহাউজে। কোল্ড চেইন মেনটেইন করে সেখানে টিকা রাখা হবে’।
নাজমুল হাসান জানান, ওয়্যারহাউজ থেকে প্রতিটি ব্যাচের টিকার নমুনা পাঠানো হবে সরকারের ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে। পরীক্ষার পর সবকিছু ঠিক থাকলে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। ছাড়পত্র পাওয়ার পর টিকাগুলো ৬৪টি জেলায় পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো। আমরা অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার পর সরকার যেখানে পাঠাতে বলবে, সেখানে পাঠিযে দেওয়া হবে। আমার ধারণা, ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে উনারা যেখানে পৌঁছে দিতে বলেছেন আমরা সেখানে পৌঁঁছে দিতে পারব। খবর বিডিনিউজের।
নাজমুল হাসান জানান, টিকার প্রতিটি কার্টনে একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস রাখা হয়েছে। এই ডিভাইস প্রতি পনের মিনিট পর পর সেরাম ইনস্টিটিউটে তাপমাত্রার হালনাগাদ তথ্য পাঠাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা টিকার কার্টনগুলো প্রথম দেখবেন। এরপর প্রতিটি কার্টন খোলা হবে। সেখানে টেম্পারেচার মনিটরিং ডিভাইস দেওয়া আছে প্রতিটি কার্টনের ভেতরে। টিকা পৌঁছে দেওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলে দায় বেক্সিমকো নেবে।
করোনা ভাইরাসের টিকার প্রথম চালান দেশে আসার পর গতকাল সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশে সেরাম।
বেক্সিমকো ফার্মার এমডি বলেন, পুরো সময় ওই টিকা ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার কথা। সেটা যাতে হয়, সে কারণেই কার্টনে ওই ডিভাইস রাখা হয়েছে। আমাদের দেখাতে হবে যে পুনে থেকে মুম্বাই, সেখান থেকে ঢাকা হয়ে আমাদের ওয়্যারহাউজ এবং সেখান থেকে জেলা পর্যায়ে পৌঁছাতে কোথাও কোনো কোল্ড চেইন ব্রেক হয়নি। যদি কোনো ড্যামেজ, শর্টেজ বা কোনো রকমের সমস্যা থাকে, তাহলে আমরা তা চেইঞ্জ করে দেব। টিকা নিয়ে সমস্ত রকমের দায়িত্ব বেক্সিমকোর।
বেক্সিমকোর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও টিকা গ্রহণ করতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
করোনা ভাইরাস মহামারির এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর আশা হয়ে এসেছে টিকা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড সেরাম ইনস্টিটিউটেও তৈরি হচ্ছে।
এই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে টিকার ৫০ লাখ ডোজ পাঠানোর কথা সেরাম ইনস্টিটিউট।
এর আগে ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে একই টিকা ২০ লাখ ডোজ পাওয়ার পর সরকার ২৭ জানুয়ারি থেকে টিকা প্রয়োগ শুরুর সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছে।
২৭ ও ২৮ জানুয়ারি ঢাকায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনের মধ্যে পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ হবে। তারপর ৮ ফেব্রূয়ারি টিকাদান শুরু হবে সারাদেশে। খবর বিডিনিউজের