ভারতে ৯৯% মৃত্যু ঠেকাচ্ছে করোনার টিকা

22

করোনা ভাইরাসের ডেল্টা সংক্রমণের ক্ষেত্রেও মৃত্যু ঠেকাতে টিকা ৯৯ শতাংশ কার্যকারিতা দেখাচ্ছে বলে দেখতে পেয়েছেন ভারতের গবেষকরা। পুনেভিত্তিক ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির (এনআইভি) গবেষকদের এই গবেষণার খবর শনিবার দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। টিকাগ্রহণকারীদের সংক্রমণ এবং মৃত্যু নিয়ে কোভিড-১৯ মহামারিকালে এটাই ভারতে সবচেয়ে বড় গবেষণা বলে সংবাদপত্রটি জানিয়েছে। গবেষকরা যেসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিয়ের ভিত্তিতে ফলাফল পেয়েছেন, তাতে করোনা ভাইরাসের আলফা, কাপ্পা, ডেল্টার সঙ্গে ডেল্টা প্লাস নমুনাও রয়েছে। প্রকাশিতব্য এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ভারতে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মূল কারণ হচ্ছে ডেল্টা, যে ধরনটি ২০২০ সালের অক্টোবরে ভারতের বিদর্ভে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল।
গত বছর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিস্থিতি সামলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা ভারতের নাভিঃশ্বাস ওঠে এই বছর দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপে। গত এপ্রিলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নজিরবিহীনভাবে বেড়ে গেলে প্রবল চাপে পড়ে দেশটি।
এরপর ভারত টিকাদানে গুরুত্ব বাড়ায়, নিজেদের চাহিদা মেটাতে কোভিড টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞাও দেয় বিশ্বে টিকা উৎপাদনকারী সর্ববৃহৎ দেশটি। খবর বিডিনিউজের।
এনআইভির গবেষক ড. প্রজ্ঞা যাদব বলেন, গবেষণায় যে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি আমরা দেখতে পেয়েছি, তা হল মৃত্যু ঠেকাতে টিকা ৯৯ শতাংশ কার্যকারিতা দেখাচ্ছে, এমনকি তা অতিসংক্রমণশীল ডেল্টার দাপটের মধ্যেই।
গবেষণার জন্য গত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, পশ্চিমবাংলা বিভিন্ন রাজ্য থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই সব নমুনার জিন বিশ্লেষণ করা হয়।
ড. যাদব বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। এদের মাত্র নয় শতাংশকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশের।
এই গবেষণায় তুলনামূলক কম বয়সীদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গবেষণা চালানো ৪৪ শতাংশের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৫৬ বছর বয়সী। আর ৬৫ শতাংশই পুরুষ।
গবেষণায় আসা ব্যক্তিদের ৭১ শতাংশই ছিল সংক্রমণের লক্ষণযুক্ত। এরমধ্যে ৬৯ শতাংশের উপসর্গ ছিল জ্বর, গায়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা, সর্দি ছিল ৫৬ শতাংশের। ৪৫ শতাংশের কাশি এবং ৩৭ শতাংশের গলা ব্যথার মতো উপসর্গ ছিল।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত ৪ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। যার অর্থ, ১৩৬ কোটি মানুষের দেশ ভারতে ২ কোটির মতো মানুষ টিকার অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন।
শনিবার ভারতে আরও ৩৮ হাজার নতুন রোগী শনাক্তের খবর আসে। এনিয়ে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ কোটি ১০ লাখ ৬৪ হাজারে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬০ জনের মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ১৩ হাজার ৯১।