ভাতিজাকে গুলি সেই ‘চাচা’ গ্রেপ্তার

3

হাটহাজারী প্রতিনিধি

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফিল্মিস্টাইলে আরব আমিরাতফেরত প্রবাসী আপন ভাতিজা হামিদুল্লাহ জসিমকে গুলির করার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর অভিযুক্ত চাচা মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (৬২) নামে সাবেক এক চেয়াম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে হাটহাজারী থানা পুলিশ। গতকাল সোমাবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে চট্টগ্রমের হাটহাজারী উপজেলার দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বকুলতলা এলাকা থেকে অভিযুক্ত এই সাবেক চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় পুলিশ হাবিবুরের কাছ থেকে একটি এক নালা বন্দুক ও একটি পিস্তলসহ তিন রাউন্ড তাজা কার্তুজ এবং ছয় রাউন্ড কার্তুজের খোসা উদ্ধার করেছে। পরে এই ঘটনায় হাটহাজারী মডেল থানায় পৃথক দুইটি মামলা করা হয়েছে। ভাতিজাকে গুলি করার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হাবিবুর রহমান একই এলাকার মৃত দুলা মিয়ার ছেলে এবং দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি গতকাল সোমাবার বিকেলে নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন সবুজ। জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে তুচ্ছ ঘটনায় ভাতিজাকে গুলি করার অভিযোগ উঠে। রবিবার রাত পৌনে ৮ টার দিকে ইউনিয়নের মধ্যম মাদার্শা বকুলতলা এলাকায় এ ঘটনার পর রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত হাবিবুর রহমান বাড়ির দোতলা থেকে নেমে তাঁর লাইসেন্স করা অস্ত্র দিয়ে সাত-আটটি গুলি ছুঁড়েন। তাঁর (চেয়ারম্যান) অস্ত্র দিয়ে ছোঁড়া গুলিতে মুখমÐলে গুলিবিদ্ধ হন তারই আপন ভাতিজা হামিদুল্লাহ জসিম। তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে গুলিবিদ্ধ জসিম চমেক হাসপাতালের ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিলায় সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে এখনও পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ জসিমের অবস্থা আশঙ্খাজনক বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে।
খবর পেয়ে হাটহাজারী থানার ওসি ও মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তবে ওই সময় পুলিশও ওই বাড়ির কাছে ঘেঁষতে পারেনি। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে ফের নিজের দোতলা বসতঘর থেকে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান একের পর এক গুলি ছুঁড়তে থাকেন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দ্বিগবিদিক ছুটতে থাকেন। এমনকি পুলিশও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বলে জানা গেছে।
গুলিবিদ্ধ জসিমের ছোট ভাই সাহেদ হোসেন বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। সাহেদ হোসেন জানান, সমাজের একটি মসজিদ নিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। এতে আমার আপন চাচা এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান তাদের পক্ষ নিয়ে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিল। এ বিষয়টি নিয়ে তার সাথে সমাজের বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ নিয়ে রবিবার সন্ধ্যার দিকে তার বাসায় গেলে তিনি তাঁর ঘরে রক্ষিত অস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন। এতে আমার বড় ভাই হামিদুল্লাহ জসিম গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়।
হাটহাজারী থানার ওসি জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেছে। সাবেক এই চেয়ারম্যানের অস্ত্র দুইটি লাইসেন্স করা হলেও তা অপব্যবহারের কারণে এ মামলা করা হয়েছে।