ভাঙা হচ্ছে নিলামের গুদাম সংরক্ষিত পণ্যের মধ্যে গাড়ি ১৪৬টি

20

ফারুক আবদুল্লাহ

ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে থাকা কাস্টম হাউজের পুরোনো নিলামের গুদাম। যেখানে সংরক্ষিত রয়েছে দীর্ঘ ২০ থেকে ২৫ বছরের পুরোনো মালামাল। পুরোনো এই গুদামটি সরিয়ে নিতে সেখানে পড়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের পণ্যের ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে এসব পণ্যের মধ্যে ১৪৬টি গাড়ির ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম শেষ করেছে কাস্টমস কর্মকর্তা। পুরো গুদামটির ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম শেষে হওয়ার পর কি পরিমাণ পণ্য সেখানে সংরক্ষিত আছে তা জানা যাবে।
এর আগে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন নিলামের গুদাম (অকশন শেড) নির্মাণ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এটি ২০১৫ সালের সেপ্টম্বরে উদ্বোধন করা। পুরোনো নিলামের গুদামের মালামাল ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম শেষ হলে তা সরিয়ে নিয়ে নতুন অকশন শেডে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে নতুন করে ৫ একর জায়গা যুক্ত হবে। এই জায়গায় প্রায় ১০ হাজার টিইইউএস কন্টেইনার রাখার ব্যবস্থা হবে। আর সেখানে বছরে ১ লাখের বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। এতে বন্দরের সক্ষমতা আগের চেয়ে বেড়ে যাবে বলে জানান বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে পুরোনো নিলামের গুদামে দীর্ঘ ২০ থেকে ২৫ বছরের পণ্য সংরক্ষিত রয়েছে। মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় এখানে অনেক পণ্য বছরের পর বছর পড়ে আছে। এমনকি ১৯৯৬-১৯৯৭ সালের মামলার কারণে আটকে পড়া পণ্যও পড়ে আছে। এখনও এসব মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। সেখানে থাকা বেশির পণ্যের ওপরে ঘাস ও লতাপাতা জন্মেছে। আর অনেক পণ্যের ওপর গাছও গজিয়েছে। তাছাড়া পুরোনো নিলামের গুদামটি ইতিমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে।
এদিকে বন্দরের পুরোনা নিলামের গুদাম থেকে মালামাল সরিয়ে নিতে কাস্টমসের দুই যুগ্ম কমিশনারকে সদস্য করে একটি কমিটি গঠন করে কাস্টমস কমিশনার। কমিটির সদস্যরা হলেন মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান ও মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ।
বর্তমানে গুদামের মালামাল ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম চলছে। গুদামে থাকা এসব পণ্যের মধ্যে ১৪৬টি গাড়ির ইনভেন্ট্রি কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়েছে। বাকী পণ্যেগুলোর ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার মো. আল আমিন বলেন, এই শেডে পুরাতন জিনিসপত্র অনেক বছর ধরে এক জায়গায় পড়ে আছে। এসবের সঠিক তথ্য বের করা অনেক কঠিন। তারপরও সেখানে থাকা বিভিন্ন ধরনের পণ্যের মধ্যে ১৪৬টি গাড়ির ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম শেষ করেছি। দ্রæত সময়ের মধ্যে বাকী পণ্যেগুলোর ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম শেষ করে নতুন শেডে সরিয়ে নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এসব পণ্যের মধ্যে যেগুলো নিলামযোগ্য পণ্য সেগুলো নিলামের ব্যবস্থা করে নিষ্পত্তি করা হবে। আর ধ্বংসযোগ্য পণ্যগুলো ধ্বংস করা হবে। এছাড়া যেগুলোর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে সেগুলোর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হবে। সে সাথে যেসব পণ্য সংরক্ষণ করার মত সেগুলো নতুন শেডে সংরক্ষণ করা হবে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম বলেন, পুরোনা অকশন শেড সরিয়ে নিতে সেখানে থাকা বিভিন্ন ধরনের পণ্যের ইনভেন্ট্রি কার্যক্রম চলছে। পুরো কার্যক্রমটি শেষ হওয়ার পর কি পরিমাণ পণ্য আছে তা জানা যাবে। তখন নিলামযোগ্য, মেয়াদোত্তীর্ণ এবং মামলা আছে এমন পণ্যের সঠিক পরিমাণও জানা যাবে।