বড় অংকের টাকার লোভে কিডনি-লিভার ‘ডোনেশন’

15

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে এসে আর্থিক সংকটে পড়া প্রবাসী ও দরিদ্র লোকদের টার্গেট করে তাদের অর্থের লোভ দেখানো হয়। এভাবে জোগাড় করে ডোনার। পরবর্তীতে এসব ডোনারকে পাঠানো হতো ভারতে। সেখানে এসব ডোনারদের কাছ থেকে নেওয়া হতো কিডনি ও লিভার। এভাবেই মানুষের কিডনি ও লিভার পাচারকারী একটি আন্তর্জাতিক চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব।
গতকাল শুক্রবার র‌্যাব-৭ এর পতেঙ্গা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের আটকের বিষয়টি জানানো হয়। আটককৃতরা হলেন কিশোরগঞ্জ সদরের আখড়া বাজার এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান রনি (৩৬), মুন্সিগঞ্জ জেলার বাসুদিয়া গ্রামের মো. মতিউর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী ডালিম (৩৫) ও মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার সম্বুক এলাকার মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. আলম হোসেন (৩৮)। তারা সবাই বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের ফাঁদে ফেলে তাদের ভারতে পাঠিয়ে কিডনি ও লিভার পাচার চক্রের সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
র‌্যাব জানিয়েছেন, এই পাচার চক্রটি কিডনি বিক্রির জন্য এ পর্যন্ত ৪০ জনকে ভারতে পাঠিয়েছে। ফেসবুক ভিত্তিক কয়েকটি গ্রæপে তারা প্রতারণার কাজগুলো করতো।
র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমএ ইউসুফ বলেন, কিডনি ও লিভার পাচারকারী তিন সদস্যের মধ্যে রনি আন্তর্জাতিকভাবে সম্পৃক্ত। করোনা মহামারির কারণে এতোদিন যারা প্রবাসে ছিলেন তাদের অনেকেই বর্তমানে দেশে ফিরে এসেছেন। প্রবাসীদের অনেকেই বিদেশে যাওয়ার আগে বিভিন্ন জনের কাছে ধারদেনা করে গেছেন। দেশে ফিরে আর্থিক সমস্যায় পড়া এ ধরণের লোকদেরই মূলত তারা টার্গেট করে। পাশাপাশি দরিদ্র লোকদেরও টার্গেট করে তারা। বাংলাদেশে এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা ডালিম। ভারতে অবস্থান করা পাচারকারী চক্রের শাহিন নামে একজন বাংলাদেশে রনি, আমলসহ অন্যদের মাধ্যমে কিডনি ও লিভারের ডোনার সংগ্রহ করে থাকেন। ডোনার সংগ্রহ করে তাদের ভারতে পাচারের ব্যবস্থা করে চক্রটি।
র‌্যাব-৭ এর জনসংযোগ কর্মকর্তা নিয়াজ মোহাম্মদ চপল বলেন, কিডনির ডোনারদের মোটা অঙ্কের অর্থের লোভ দেখিয়ে ভারতে পাঠানো হয়। এ জন্য তাদের পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়াসহ সব ব্যবস্থা করে চক্রের সদস্যরা। প্রতি কিডনি ডোনারের সঙ্গে ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় মৌখিক চুক্তি হতো। আর চক্রটি কিডনি বিক্রির জন্য ভারতীয় এজেন্টদের কাছ থেকে নিত ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা।