ব্রিটিশ রাজত্বের পতন

19

পূর্বদেশ ক্রীড়া ডেস্ক

এক সময় সারা বিশ্বকে শাসন করেছিল ব্রিটিশরা। এমনও বলা হয়েছিল যে, ব্রিটিশ সূর্য কখনো অস্ত যাবেনা। শুধু পাক-ভারত উপমহাদেশ অর্থাৎ ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে তারা শাসন করেছিল দীর্ঘ ১৯০ বছর। কিন্তু স্বাধীনতাকামী মানুষের দীর্ঘ সংগ্রামের পর এ উপমহাদেশ ছেড়ে ১৯৪৭ সালে পালাতে বাধ্য হয়েছিল বিলেতি শাসকরা।
ক্রিকেটের জনক বলা হয়ে থাকে এই ব্রিটিশদের। সীমিত ওভারের সেরা দুই ফর্ম্যাট অর্থাৎ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও তারা। চলমান সিরিজ শুরুর আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় তো দূরের কথা, কোনো জয়ই ছিল বাংলাদেশের। চট্টগ্রামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেই অধরা জয়ের দেখা পায় টাইগাররা। আর মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংলিশদের পর্যুদস্ত করে হারাল ৪ উইকেটে। তাতেই ব্রিটিশ বেনিয়াদের বিপক্ষে প্রথমবার টি-২০ সিরিজ জেতার মাধ্যমে রূপকথার গল্প লিখল বাংলাদেশ।
বল হাতে ৪ উইকেট নেয়ার পর ব্যাট হাতেও দায়িত্বশীল ইনিংস খেললেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রয়োজনের সময় নাজমুল হোসেন শান্তকে দিলেন দারুণ সঙ্গ। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টুয়েন্টি সিরিজেই বাংলাদেশ পেল জয়ের স্বাদ।
বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দেয়া ১১৮ রানের লক্ষ্যে স্বাগতিকরা পৌঁছায় ৬ উইকেট হারিয়ে, ৭ বল হাতে রেখেই। তিন ম্যাচ সিরিজের ফয়সালা হয়ে গেল এক ম্যাচ আগেই। টি-টুয়েন্টিতে টাইগারদের ১৭ বছরের পথচলায় এটিই প্রথম ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। মঙ্গলবার মিরপুরে টিম টাইগার্স তৃতীয় টি-টুয়েন্টি খেলতে নামবে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য নিয়ে। ছোট ফরম্যাটে টাইগারদের সবচেয়ে বড় অর্জনের এটি একটি। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এরআগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া,নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়েকে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে সিরিজে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
ওয়ানডে সিরিজ হাতছাড়া হওয়ার ভেন্যুতেই টি-টুয়েন্টি সিরিজ জয়ের সুযোগ আসে বাংলাদেশের। ইংল্যান্ডকে ১১৭ রানে আটকে ফেলে দারুণ সম্ভাবনা জাগায় স্বাগতিকরা। জবাবে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস দলীয় ১৬ রানে ও ২৭ রানে আউট হন রনি। আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দারুণ ব্যাটিং করে জয়ের দিকে এগিয়ে নেন দলকে। তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে জুটিও জমে ওঠে। দলীয় পঞ্চাশ পেরোনোর পর অভিষিক্ত লেগ স্পিনার রেহান আহমেদের শর্ট বলে ব্যাকওয়াট পয়েন্টে ক্যাচ দেন হৃদয়। লো-স্কোরিং ম্যাচে ১৮ বলে ১৭ রান করে যান তিনি।
৫৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর শান্তর সঙ্গে মিরাজের জুটি একশর কাছে নিয়ে যায় দলকে। ১৬ বলে দুই ছক্কায় ২০ রান করা মিরাজ জফরা আর্চারের বলে আদিল রশিদের হাতে ক্যাচ দেন। দলের রান তখন ৯৭।
বাংলাদেশ একশ ছুঁতেই আউট হন সাকিব (তিন বলে শূন্য রান)। আফিফ হোসেনের (২) স্টাম্প উপড়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন আর্চার। শান্ত আবারও নিজেকে মেলে ধরে এনে দেন রোমাঞ্চকর জয়। এ বাঁহাতি ৪৭ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন। মারেন তিনটি বাউন্ডারি। ইংলিশ পেসার ক্রিস জর্ডানকে টানা দুই বলে চার মেরে সিরিজ জয়ের আনন্দে মাতেন তাসকিন আহমেদ।
এর আগে টস জিতে সফরকারীদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ১১৭ রানেই আটকে দেয় বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন বেন ডাকেট। ওপেনার ফিল সল্টের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। বাংলাদেশের দারুণ বোলিংয়ে বাকি ব্যাটাররা ছিলেন আসা-যাওয়ার মধ্যে। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন চারজন বোলার-সাকিব, তাসকিন, হাসান ও মোস্তাফিজ।