ব্যাগের ভেতর ২৫ রকম ওষুধ চমেক হাসপাতালে যুবক গ্রেপ্তার

23

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্বরত কর্মচারীরা ওষুধ চোর চক্রের কাছে বিক্রি করছে রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত বিনামূল্যের ওষুধ। এ কারণে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী পান না কোনো ওষুধপত্র। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে প্রয়োজনীয় প্রায় ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। এতে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের আর্থিক সংকটে সম্মুখীন হচ্ছেন।
এদিকে গতকাল শনিবার অন্তত ২৫ ধরনের বিভিন্ন অপারেশনের ওষুধসহ আরাফাতুল ইসলাম নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। চমেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে থেকে তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়। আটকের পর তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুর উল্লাহ আশেক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে থেকে ব্যাগভর্তি ওষুধসহ আরাফাতুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। এসময় তার কাছ থেকে ২৫ ধরনের ওষুধ জব্দ করা হয়। এসব ওষুধ বিভিন্ন অপারেশনের কাজে ব্যবহৃত হয় বলে আমাদের ধারণা। এর আগেও বিভিন্ন সময় ওষুধ চোর চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরাফাতুল নামের ওই যুবক জানিয়েছেন, হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের কর্মচারীরাই তার কাছে এসব ওষুধ বিক্রি করেছে। রোগীর জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত বিনামূল্যে দেওয়া এসব ওষুধ চুরি করেই তা টাকার বিনিময়ে তার কাছে বিক্রি করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এই ওষুধ চুরির সাথে আরও কে বা কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের বিনামূল্যে দেওয়া ওষুধসহ হাতেনাতে আটক হওয়া আরাফাতুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করেছি। এছাড়া হাসপাতাল থেকে ওষুধ চুরি ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কর্তৃপক্ষ।
একইভাবে গত ১১ জুলাই ওষুধ চুরির অভিযোগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত তিন ওয়ার্ড বয়কে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- দিলীপ কুমার নাথ, আশীষ দাশ ও পলাশ ধর। তারা হাসপাতালের এক আউটসোর্সিং ঠিকাদারের অধীনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বয় হিসেবে কাজ করতেন।
এদিকে গত ৭ জুলাই হাসপাতাল থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ওষুধ চুরি করে বাইরের ফার্মেসিতে বিক্রির জন্য নেওয়ার পথে সুমন বড়ুয়া নামে এক ওয়ার্ড বয়কে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সুমনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনজনকে গেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ।
এছাড়া ২১ জুন সরকারি ওষুধ চুরির দায়ে গোলাম রসুল নামে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোলাম রসুল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে (২১নং ওয়ার্ডে) কর্মরত ছিলেন। ওইদিন বিকেলে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হওয়ার পথে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
তাছাড়া গত ৭ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের ২৬ নং ওয়ার্ড থেকে সরকারি ওষুধ পাচারকালে মো. সৈয়দ নামে একজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে আশু চক্রবর্তী নামে হাসপাতালের সরকারি এক কর্মচারীকেও আটক করা হয়। তার বাসা থেকেও বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ উদ্ধার করে পুলিশ।