ব্যক্তিগত ও কর্মক্ষেত্রের জীবন আলাদা রাখেননি তিনি

14

পূর্বদেশ ডেস্ক

জার্মানির সবচেয়ে পঠিত সংবাদপত্র ‘বিল্ড’-এর প্রধান সম্পাদক ইউলিয়ান রাইশেল্টকে গত সোমবার তার পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ‘ব্যক্তিগত ও কর্মক্ষেত্রের জীবন আলাদা রাখতে না পারায়’ এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বিল্ড পত্রিকার মালিক জার্মানির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা সংস্থা ‘আক্সেল স্প্রিঙ্গা’ সোমবার এক বিবৃতিতে রাইশেল্টকে সরিয়ে দেয়ার খবর জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, রাইশেল্ট ‘স্পষ্টতই তার ব্যক্তিগত ও কর্মক্ষেত্রের জীবন আলাদা রাখেননি এবং এই বিষয়ে বোর্ডকে সত্যটা জানাননি’।
‘সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের তদন্তে’ এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আক্সেল স্প্রিঙ্গা।
গত রবিবার নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রবন্ধের পরদিন রাইশেল্টকে সরানো হলো। রাইশেল্টকে নিয়ে আক্সেল স্প্রিঙ্গার করা তদন্তের ভিত্তিতে প্রবন্ধটি লেখা হয়।
রাইশেল্ট কীভাবে তার সঙ্গে সখ্য থাকা ইন্টার্নদের পদোন্নতি দিয়েছেন এবং একসময় তাদের সরিয়ে দিয়েছেন,সেসব নিয়ে তদন্ত করেছিল আক্সেল স্প্রিঙ্গা। তদন্ত চলাকালীন রাইশেল্টকে দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। তদন্ত শেষ হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে প্রধান সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার মতো অভিযাগ পাওয়া না যাওয়ায় আবারও রাইশেল্টকে দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। ফলে নতুন কোনো অভিযোগের কারণে তাকে সরানো হলো কিনা তা স্পষ্ট করেনি আক্সেল স্প্রিঙ্গা।
এর আগে জার্মানির প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ‘ডেয়ার স্পিগেল’- এও রাইশেল্টকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। সেখানে রাইশেল্টের বিরুদ্ধে নারী ট্রেইনি ও ইন্টার্ন নিয়োগ, দ্রুত পদোন্নতি প্রদান ও এরপর দ্রুত চাকরিচ্যুতির অভিযোগ আনা হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনের জন্য স্পিগেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ৪১ বছর বয়সি রাইশেল্ট। ২০১৮ সালে তিনি বিল্ডের প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রবন্ধে আক্সেল স্প্রিঙ্গার বিরুদ্ধে রাইশেল্টকে নিয়ে করা তাদের তদন্তের ফলাফল জার্মান গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে না দেয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয়, জার্মানির আরেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ইপেন মিডিয়া গ্রুপ রাইশেল্টের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছিল। কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশ করতে দেয়া হয়নি।
কিন্তু ইপেন মিডিয়া জানিয়েছে, তারা কোনো চাপের মুখে রিপোর্ট প্রকাশ থেকে বিরত থাকেনি। বরং তাদের মনে হয়েছে যে, রিপোর্ট প্রকাশ হলে মনে হতে পারে যে ‘আমরা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এমন করেছি’। খবর ডয়সে ভেলে’র
আইনি পদক্ষেপ
এদিকে, রাইশেল্টকে সরানোর পাশাপাশি সোমবার ‘তৃতীয় পক্ষের’ বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপেরও ঘোষণা দিয়েছে আক্সেল স্প্রিঙ্গা। তাদের বিরুদ্ধে কোম্পানির ক্ষতিসাধন ও রাইশেল্টকে সরানোর লক্ষ্যে গোপন ব্যবসায়িক তথ্য ও ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাইশেল্টের পদে আক্সেল স্প্রিঙ্গার মালিকানায় থাকা আরেক সাপ্তাহিক ব্রডশিট ‘ভেল্ট আম জনটাগ’- এর প্রধান সম্পাদক ইয়োহানেস বয়েকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘পলিটিকো’ কিনে নেয় আক্সেল স্প্রিঙ্গা।