বোয়ালখালীতে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হত্যা মামলার আসামি নিহত

36

বোয়ালখালীতে মো. নাছির (৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার ২৪ ঘণ্টার মাথায় হত্যাকাÐের মূল আসামি শওকত হোসেন চইল্ল্যা (৪৫) ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। এ সময় বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিমসহ ২ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
গত শনিবার রাতে উপজেলার চরণদ্বীপে বড়ুয়াপাড়া সংলগ্ন বালুর মাঠ এলাকায় পুলিশের সাথে এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
শওকত উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের খলিল তালুকদার বাড়ির হাছি মিয়ার ছেলে। তিনি গত শুক্রবার দিবাগত রাতে একই এলাকার নাছির হত্যাকান্ডে জড়িত থাকায় আটক হন পুলিশের হাতে। ওই সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের দাবি, মুক্তিযোদ্ধা আলী মদনের ছেলে মো. নাছির হত্যা মামলার প্রধান আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী শওকতের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ বিভিন্ন আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালখালী থানার ওসি আবদুল করিম।
গত শুক্রবার উপজেলার চরণদ্বীপে নাছিরকে গুলি করে হত্যা করে শওকত ও তার ছোটভাই জসীমসহ একটি সন্ত্রাসী গ্রূপ। এ সময় নাছিরের পিতা মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন ও ছোটভাই লোকমান আহত হন। শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের খলিল তালুকদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পুলিশ জসিম উদ্দিন ও শওকত হোসেনকে আটক করে ও তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি এলজি, ৫ রাউন্ড গুলি, ২টি কার্তুজ, ছুরি, চাপাতি ও দা উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, চরণদ্বীপের বটতল এলাকার বাসিন্দা হাছি মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধা আলী মদনের পরিবারের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ রয়েছে। শুক্রবার রাতে এলাকার এক ধনাঢ্য ব্যক্তি খলিল তালুকদার নিজ বাড়িতে যাকাতের টাকা বণ্টন করছিলেন। টাকা বণ্টনে অনিয়মের অভিযোগ এনে আলী মদনের ছেলে লোকমান প্রতিবাদ করলে হাছি মিয়ার ছেলে জসিমের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। খবর পেয়ে জসিমের ভাই শওকত বাড়ি থেকে বন্দুক এনে লোকমানকে মারধর করতে থাকে। লোকমানকে বাঁচাতে বড়ভাই নাছির ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন এগিয়ে এলে জসিম ও শওকত তাদের উদ্দেশে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এতে মুক্তিযোদ্ধা আলী মদন ও তার ছেলে নাছির গুলিবিদ্ধ হন। রাতে আহতদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে নাছিরকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এ ঘটনায় এসআই সুমন কুমার দে বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে এবং নিহত নাছিরের ভাই জয়নাল বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আলী মদনের উপর হামলা ও নাছিরকে গুলি করে হত্যা ও অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করেন শওকত।
শনিবার দিবাগত রাতে অতিরক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে বোয়ালখালী থানার ওসি আব্দুল করিম, এসআই সুমন কুমার দে, এসআই আরিফুর রহমান সরকার, এসআই কুদ্দুছ ফোর্সসহ শওকতকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যাওয়ার পথে চরণদ্বীপ বালুরঘাট এলাকায় শওকতের বাহিনীর সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শওকতকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ১০টি কার্তুজের খোসা, একটি রামদা, একটি চাকু উদ্ধার করা হয়।
এ সময় নাছির হত্যায় জড়িত আরও একজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।