বোয়ালখালীতে চুরির অপবাদে যুবককে মধ্যযুগীয় নির্যাতন!

36

বোয়ালখালীতে ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে পুরুষাঙ্গে গরম লোহার শিক ঢুকিয়ে মো. আশিক (২৪) নামের এক যুবককে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে গতকাল শুক্রবার বোয়ালখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আশিকের পিতা আবুল কালাম। পৌরসভার গোমদন্ডী মুজাহিদ চৌধুরী পাড়ার নকীব আলী চৌধুরী বাড়ির আবুল কালামের ছেলে মো. আশিক নিজ বাড়িতে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে রয়েছেন। আশিকের পিতা আবুল কালাম পেশায় একজন দিনমজুর।
আশিকের পিতা আবুল কালাম জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে রান্নার জন্য দোকান থেকে ডিম কিনতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন যুবক দুইটি ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে অলিবেকারি চাইলদ্যাতল এলাকা থেকে আশিককে অটোরিকশায় তুলে পৌরসদরের রেল লাইনের পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়। এরপর ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে আশিককে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা লোহার শিক আগুনে গরম করে পুরুষাঙ্গের ছিদ্রপথে ঢুকিয়ে দেয়। পরে আশিকের সাথে থাকা ডিম সিদ্ধ করে পায়ুপথে দেওয়ার চেষ্টা চালায়। এসময় আশিক অজ্ঞান হয়ে পড়লে তারাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ পর্যন্ত নিয়ে গেলে আশিকের জ্ঞান ফিরে আসায় তাকে সেখানে ভর্তি না করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
তিনি আরো জানান, পরবর্তীতে স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে চিকিৎসা বাবদ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেয় তারা। এক পর্যায়ে আশিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারাও চমেক হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। উপায়ান্তর না দেখে হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমানের তত্ত্বাবধানে প্রাইভেট চিকিৎসা করানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এলাকাবাসী এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বলেন, হত দরিদ্র পরিবারের ছেলে আশিককে ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে বর্বরতা চালানো হয়েছে। ছেলেটি বর্তমানে বিনা চিকিৎসায় বাড়িতে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে রয়েছে। অথচ যে ছাগল দুটি চুরি হয়েছে বলে এ নির্যাতন চালানো হয় সেই ছাগল দুটি উপজেলার একটি বাজার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাহলে বিনাবিচারে বিনা অপরাধে এ কোন ধরনের শাস্তি পেল ছেলেটি।
বোয়ালখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হেলাল উদ্দিন ফারুখী বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।