বোরো আবাদ কমেছে ১৬৫ হেক্টর জমিতে

16

মো. শাহাদাত হোসেন, চন্দনাইশ

চন্দনাইশ উপজেলা আদিকাল হতে কৃষি নির্ভর এলাকা হিসেবে পরিচয় রয়েছে। এখানকার অধিকাংশ মানুষ কোন না কোনভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। চলতি মৌসুমে প্রায় ১শ ৬৫ হেক্টর জমিতে বোরোর চাষ কম হয়েছে বলে জানা যায়। উপজেলার ২টি পৌরসভা, ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে এই উপজেলার সবকটি এলাকা চাষাবাদের আওতায় রয়েছে। কিন্তু চলতি মৌসুমে বোরো ধানের চাষাবাদ কমে যাওয়ায় কৃষকেরা অনেকটা হতাশ। জানা যায়, চলতি মৌসুমে চাষাবাদের জমিতে অন্যান্য ফসল ও বিভিন্ন জাতের ফলের বাগান করার কারণে বোরো ধানের প্রায় ১শ ৬৫ হেক্টর জমিতে বোরোর চাষ কম হয়েছে। তবে কৃষি কর্মকর্তার দেয়া তথ্য মতে, বোরো ধানের আবাদ কমলেও অন্য ফসলের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মৌসুমে ৩ হাজার ৪শ ১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হলেও চলতি বছরে সেটা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২শ ৫০ হেক্টরে। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ১শ ৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ কম হয়েছে। কৃষক ফরিদ আহমদ চৌধুরী জানান, মাটি দস্যুরা রাতের আঁধারে ফসলী জমির টপসয়েল কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। এতে ফসলী জমিগুলো ডোবায় পরিণত হচ্ছে। প্রতি বছর শুস্ক মৌসুম আসলেই ব্রিক ফিল্ড, বাড়ি-ভিটা তৈরির কাজে ধানী জমি থেকে মাটি নিয়ে যাচ্ছে ভূমি দুস্যুরা। ব্রিক ফিল্ডের কাঁচা মাল হিসেবে মাটির ব্যবহার রোধ করা না গেলে এ এলাকা ডোবায় পরিণত হবে। কমে যাবে আবাদী জমি। কৃষক লীগ নেতা নবাব আলী বলেছেন, মানুষ অপরিকল্পিতভাবে যেখানে সেখানে ফসলী জমি ভরাট করে ঘর-বাড়ি, দালান খোটা, গড়ে তুলছে। যার ফলে পানি চলাচলের ব্রিজ, কালভার্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই সেচের পানি ঐ এলাকা গুলোতে পৌঁছাতে পারছেনা। বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।  কৃষক আবদুস সবুর বলেছেন, গত বছর ৩ একর জমিতে বোরো ধানের চাষ করেন। কিন্তু এ বছর কোন চাষ করেনি। বোরো ধান চাষে সেচের খরচ, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, সার ও কীটনাশকের দাম বাড়তি হওয়ায় উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভ না থাকায়। খরচের তুলনায় উৎপাদিত ধানের মূল্য কম। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচ প্রকল্প নিয়মিত পানি না দেয়ায় তাদের বর্তমান বোরো ধানের অবস্থা খুব খারাপ। বিভিন্ন এলাকার মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, বাকি জমিতে অন্যান্য সবজি চাষ হয়েছে। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ভূট্টা, মসূর ডাল, গম, ফ্রান্স বিম, ফেলন, ড্রাগনসহ নানান ধরণের বাগানে ঝুঁকছে কৃষক। কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রাণী সরকার বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম চাষ হয়েছে বিষয়টি এমন নয়। কারণ বাকি জমিতে ভিন্ন রকমের পর্যাপ্ত সবজি চাষ হয়েছে। উপজেলার পানি উন্নয়ন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজমানুর রহমান বলেছেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ১১ টি বারেক পাইপ (সেচ প্রকল্প) স্থাপন করা হয়। ১ টি বারেক পাইপে ১ কি.মি. জমি সেচ পানির আওতায় আসে। এই পাইপের ফলে পানি সাশ্রয়, পরিত্যক্ত জমিতে চাষ, সহজে পানি সরবরাহ করা যায়। এটি একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা। একবার বসালে পরবর্তীতে তেমন কোন খরচ নেই।