বোনের ইজ্জত রক্ষায় ভাইয়ের প্রাণপণ লড়াই

41

রাসেল চৌধুরী, কক্সবাজার

কক্সবাজারে বোনকে ইভটিজিং ও তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বখাটেরা। এ সময় বোনের ইজ্জত রক্ষায় ছুটে আসেন ভাই। তিনি বখাটেদের হাত থেকে বোনকে রক্ষা করেন। একই সাথে এ ঘটনায় বখাটেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বেধড়ক মারধরের শিকার হন।
বোনের সম্ভ্রম রক্ষায় ভাইয়ের প্রাণপণ চেষ্টা এবং বেধড়ক মার খাওয়ার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এতে দেখা যায়, স্থানীয় বখাটেরা ফিল্মি স্টাইলে নাফিসা আক্তারকে (১৪) তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বোনকে রক্ষায় ছুটে আসেন ভাই আব্দুল মোনাফ। বখাটেদের কাছ থেকে বোনকে রক্ষা করতে পারলেও বেধড়ক মারধরের শিকার হন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউপির আশ্রয়ন প্রকল্প সংলগ্ন মনুপাড়ায়।
ভুক্তভোগী নাফিজা ও মোনাফ মৃত হাবিব উল্লাহর সন্তান। তারা খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ন প্রকল্পের ঝিনুক বিল্ডিং, ফ্ল্যাট নং-৪০১ এর বাসিন্দা।
ঘটনাটি গত ৩১ মে বিকালে ঘটলেও তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় শনিবার রাতে। এরপরই নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শনিবার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে ৩ জনের মধ্যে অভিযুক্ত ২ বখাটেকে আটক করেছে পুলিশ।
আবদু মোনাফ বলেন, বোনকে রক্ষা করতে গিয়ে বখাটেদের হাতে বেধড়ক মারধরের শিকার হই। আমার বোন মামাবাড়ি শহরের সমিতিপাড়ায় বেড়াতে গিয়েছিল। ৩১ মে বোন বাড়ি ফেরার পথে মনুপাড়ার আরমান, জামাল ও রায়হানসহ ৬-৭ জন আমার বোনকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। আমার বোন কয়েকবার ফিরে আসতে চাইলে তারা বারবার পথ আটকাচ্ছিল, তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি দূর থেকে দেখেই দৌড়ে আসি। বখাটেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাথে সাথে তারা আমার বোনকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। তখন আমি বোনকে জড়িয়ে ধরি। এ সময় তার গায়ে কেন হাত দিয়েছে জানতে চাইলে তারা আমাকেও মারধর শুরু করে।
ভুক্তভোগী যুবক আরও বলেন, ঘটনার পর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিই। এরপর সদর থানায় অভিযোগ করি। কিন্তু ঘটনার ১১ দিন পার হলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তাই বখাটেরা আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে। এ কারণে শনিবার রাতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করি।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী যুবক সেদিন পুরো ঘটনা গোপন করে শুধু মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ দেন। এ কারণে পুলিশ তাৎক্ষণিক আসল ঘটনা জানতে পারেনি। ভাইরাল ভিডিওর সাথে অভিযোগের কোন মিল নেই।
তিনি বলেন, ভিকটিমের মা হাফেজা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেন। অভিযুক্ত রায়হান (২০) ও আরমানকে (২০) আটক করা হয়।