বে-টার্মিনাল নির্মাণে কোরীয় দুই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ

27

নিজস্ব প্রতিবেদক

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘বে-টার্মিনাল নির্মাণ’ পিপিপি প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। যৌথভাবে কাজটি পেয়েছে কোরিয়ার কুনওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসালটিং কোম্পানি লিমিটেড এবং ডিয়েনইয়াং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। এতে মোট ব্যয় হবে ১২৬ কোটি ৪৯ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮৬ টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১০ম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১২তম সভা আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ১টি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য (টেবিলে ৩টি উপস্থাপন-সহ) ১১টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।
সভা শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘বে-টার্মিনাল নির্মাণ’ পিপিপি প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে কাজটি পেয়েছে কোরিয়ার কুনওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসালটিং কোম্পানি লিমিটেড এবং ডিয়েনইয়াং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। এতে মোট ব্যয় হবে ১২৬ কোটি ৪৯ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮৬ টাকা।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য মতে, চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল প্রকল্প হলো বে-টার্মিনাল। পতেঙ্গা-হালিশহর এলাকার সাগরতীর ঘেঁষে প্রস্তাবিত এ প্রকল্প চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান সক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ পণ্য হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। গত বছর দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর ৩০ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছিল। বে-টার্মিনালের সক্ষমতা হবে প্রায় ৫০ লাখ টিইইউএস। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা। তবে সরকারি খাসজমি নামমাত্র মূল্যে পেলে এ খাতে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় হবে। এই টার্মিনালের জেটিতে ১২ মিটার গভীরতার এবং ২৮০ মিটার দৈর্ঘ্যর জাহাজ ভিড়তে পারবে। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান জেটিগুলোয় ৯ দশমিক ৫ মিটার গভীরতা ও ১৯০ মিটারের বড় কোনো জাহাজ ভিড়তে পারে না।
তাছাড়া বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত ৮৭১ একর ভূমির মধ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন ৬৮ একর জমি বন্দর কর্তৃপক্ষ কিনে নিয়েছে। এই জমিতে যথারীতি ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণসহ বিভিন্ন কর্মযজ্ঞ চলছে। বাকি ছিল ৮০৩ একর সরকারি খাসজমি। এই জমি জেলা প্রশাসনের দায়িত্বে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। যেহেতু উক্ত খাসজমি সরকারের, তাই নামমাত্র মূল্যেই পাওয়া যাবে।
এদিকে গত ১৯ আগস্ট বে-টার্মিনালের প্রস্তাবিত জায়গা পরিদর্শন শেষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ‘বে-টার্মিনালের’ তিনটি টার্মিনাল ২০২৪ সালে চালু হবে।
এসময় তিনি বলেন, বে-টার্মিনালে প্রথম পর্যায়ে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ হবে। এর মধ্যে একটি টার্মিনাল বন্দরের অর্থায়নে হবে। বাকি দুটি টার্মিনাল হবে পিপিপি মডেল বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে। এই তিনটি টার্মিনাল ২০২৪ সালের মধ্যে চালু করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।