বেতন-ভাতা না দিয়ে মালিক উধাও, শ্রমিকদের বিক্ষোভ

9

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) ‘পদ্মা ওয়্যারস লিমিটেড’ নামে একটি পোশাক কারখানার মালিক শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন ও বিভিন্ন ভাতা পরিশোধ না করে ৪৫ দিনের লে-অফ ঘোষণা করে পালিয়ে গেছেন। আকস্মিকভাবে কারখানা বন্ধ করার বিষয়টি সকালে শ্রমিকরা জানতে পেরে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
বেপজা কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো ধরনের সমাধান না পেয়ে ওই কারখানার হাজারখানেক শ্রমিক চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে সাময়িক যানবাহনে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করে বকেয়া টাকা পরিশোধের দাবি জানান পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। পুলিশের আশ্বাসে দুপুর দুইটার দিকে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
জানা গেছে সিইপিজেডের ৪ নম্বর সড়কে অবস্থিত ‘পদ্মা ওয়্যারস লিমিটেড’ এর মালিক নেছার উদ্দিন সোহাগ। কারখানাটিতে ১৪০০ জন শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। প্রতিদিনের মত গত মঙ্গলবারও শ্রমিকরা কারখানায় কাজ করেছেন। কিন্তু গতকাল বুধবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় গিয়ে দেখেন ৪৫ দিনের জন্য লে-অফের নোটিশ ঝোলানো হয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে বেপজা কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে কোনো ধরনের সমাধান না পেয়ে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
কারখানার কাটিং সেকশনের শ্রমিক মোহাম্মদ বেলাল বলেন, আমাদের মধ্যে অনেকের জানুয়ারি-ফেব্রূয়ারি দুই মাসের বেতন বকেয়া আছে। আর অল্প কিছুসংখ্যক শ্রমিক জানুয়ারি মাসের বেতন পেয়েছেন। এছাড়া কারখানার সকল শ্রমিকের ওয়াভারটাইম ভাতা বকেয়া আছে। গত একমাস ধরে আমরা মালিকের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। সকালে কারখানায় গিয়ে দেখি ৪৫ দিনের জন্য লে-অফের নোটিশ ঝোলানো হয়েছে। পূর্বঘোষণা ছাড়া এভাবে তো কারখানা লে অফ করা যায় না। আমাদের বেতন-ভাতা কীভাবে পরিশোধ হবে সেটাও কর্মকর্তারা জানাতে পারছিলেন না। সে জন্য আমরা মিছিল করে প্রেস ক্লাবের সামনে আসি।
সিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মশিউদ্দিন মেজবাহ বলেন, পদ্মা ওয়্যারসের মালিক ৪৫ দিনের জন্য কারখানা লে অফ ঘোষণা করে পালিয়ে গেছেন। আমরা অনেকভাবে চেষ্টা করেও তার খোঁজ পাচ্ছি না। কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন শুনেছি। কিন্তু এখানে আমাদের দুটো অপশন আছে। মালিককে যে কোনোভাবে খুঁজে বের করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে, অথবা লে অফ ঘোষিত কারখানা সরকারি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা একটা উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
কোতয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, আমরা বেপজা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বৃহস্পতিবার (আজ) শ্রমিক ও মালিকপক্ষের মধ্যে বৈঠকের আশ্বাস দেওয়ার পর তারা সড়ক থেকে অবরোধ সরিয়ে নেয়।