বেকায়দায় নৌকার প্রার্থীরা সুযোগ সন্ধানে বিরোধীরা

30

চকরিয়া প্রতিনিধি

চকরিয়ায় চতুর্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৮ জন বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে বেকায়দায় পড়েছেন দলীয় মনোনীত নৌকার প্রার্থীরা। অন্যদিকে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
নির্বাচনী মাঠে থাকা আওয়ামী লীগের ৮ বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নে হাসানুল ইসলাম আদর ও কলিম উল্লাহ কলি, চিরিঙ্গা ইউনিয়নে জসিম উদ্দিন ও জামাল হোসেন চৌধুরী, হারবাং ইউনিয়নে ছৈয়দ নূর ও মনোনয়ন বঞ্চিত এ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মিরানুল ই্সলাম মিরানের ভাই জাহেদুল ইসলাম, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর ভাই নাসির উদ্দিন এবং বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে মো. কফিল উদ্দিন। আবার কয়েকটি ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ প্রার্থীরা নৌকার পক্ষে কাজ করা থেকে বিরত থাকছেন। ইউপি নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এসব ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় এখন অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
চকরিয়ার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে জানা যায়, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিতরা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তাদের কারণে এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বেকায়দায় রয়েছেন। ফলে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে এসব বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছে জোরালোভাবে। তাদের বহিষ্কার না করলে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের ভরাডুবির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও অনেকে মন্তব্য করেন।
৮ ইউনিয়নে বিএনপি ও জামায়াত সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের দলীয় নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে খুটাখালী ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এসএম মনজুর আলম ও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মুহাম্মদ আবদুর রহমান। ডুলাহাজারা ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, জামায়াতের মাওলানা মো. গিয়াস উদ্দিন ও মাহবুবুর রহমান। ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এহসানুল করিম, শওকত ইসলাম ও জামায়াত সমর্থিত মো. কুতুব উদ্দিন। বরইতলী ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জালাল আহমদ সিকদার, নাগরিক কমিটির ব্যানারে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মো. ছালেকুজ্জামান এবং বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে বিএনপির আবদুল মতলব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পর্যায়ের এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, দলের মধ্যে অন্তঃকোন্দল থাকায় নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে বিদ্রোহীরা প্রার্থী হয়েছেন। তাদের দমন করা না গেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, তৃতীয় দফায় কৈয়ারবিল ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী জন্নাতুল বকেয়া রেখা শুধু ৯৯ ভোট পেয়েছেন। সারাদেশে সবচেয়ে কম সংখ্যক ভোট পেয়েছেন তিনি। একইভাবে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে ১৪৫ ভোট পেয়েছেন নৌকার প্রার্থী মো. নাজেম উদ্দিন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কার করা দরকার। এদের কারণে নৌকার প্রার্থীরা বেকায়দায় রয়েছেন। একইভাবে বিএনপি-জামায়াত সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। নৌকার পক্ষে এক হয়ে কাজ না করলে নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনা সহজ হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।