বৃক্ষপ্রেম এবং শস্যভাণ্ডার

23

মিয়া জামশেদ উদ্দীন

দিবাস্বপ্ন জাগানিয়া। আবার ক্ষাণিক কাছেও টানে, অনেকটা অজান্তে প্রকাশ পায়। ‘বৃক্ষ কথা বলে।’ বিষয়টি এখন স্পর্শকাতর হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও-বা পুরো বিষয়টি খেয়ালিপনা ছিল। কিন্তু বৃক্ষের যে ‘প্রাণ’ আছে- বিজ্ঞানী স্যার জগদীস চন্দ্র বসু তা প্রমাণ করেছেন। তা নিয়ে বির্তকের সুযোগ নেই; গাণিতিকভাবে তা স্বতসিদ্ধভাবে প্রমানিত।
২০১২ সালের দিকে দেশের দৈনিক পত্রিকাগুলো, আরো একটি চমকপদ খবর প্রকাশ করে। ছোট্ট ওই খবরটি রীতিমত মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা হয়। দৈনিকগুলোর সাইট হিস্টোরি ছিল এটি। ইংল্যাণ্ড ও নেদারল্যাণ্ডের বিজ্ঞানীদের যৌথ গবেষনালব্ধ আবিষ্কার। ওই দুই দেশের বিজ্ঞানিরা আরো একধাপ এগিয়ে বললেন, তাঁরা ওয়াইপাই নামের একটি যন্ত্রও আবিষ্কার করেছেন, যা দিয়ে বৃক্ষের কথা বলা শুনা যায়। বিশ্বের প্রতাপশালী এই দু’ দেশের বিজ্ঞানীদের দীর্ঘ গবেষণাকৃত আবিষ্কার বলে দাবি করা হয়। সেখানে দ্বিমত করা বা চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই! কথা হলো, আমাদের অর্থনীতির সূচক সর্বনিম্নে অর্থাৎ তৃতীয় বিশ্বের দেশ বা তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক আমরা – অবশ্য এসব প্রশ্ন তোলাটা-ই অবান্তর। তারপরও এমন একটা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানেই দুঃসাহসিকতার প্রকাশ পায়।
অতঃপর সংবাদটি দৃষ্টিগোচর হয় এবং তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। প্রথমত ‘বৃক্ষ কথা বলে’ Ñ বিষয়টি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানীত হওয়ায় গবেষকদের অভিনন্দন জানাতে হয়। দ্বিতীয়ত জোর প্রতিবাদ জানায়। তাই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিইÑ এটি তাদের প্রথম আবিষ্কার নয়। ইংল্যান্ডভিত্তিক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টলার ‘ইউকেবিডি’তে তাৎক্ষণিক এক সাক্ষাতকার প্রকাশিত হয়। অনলাইনটির সম্পাদক লন্ডন প্রবাসি সোহেল মারুফ এবং এটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি ছিলেন ইকবাল হোসেন রুবেল।
২০১০সালে ‘ভূমিপুত্র’ নামে আমার (জামশেদ উদ্দীন) এ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়। অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে ‘অবনী’ প্রকাশন এটি প্রকাশ করে। যদিও-বা প্রকাশনা সংস্থাটি তেমন নাম ডাক, বিখ্যাত নেই, তা নির্দ্বিধায় বলতে পারি। গ্রন্থের প্রচ্ছদশিল্পী ছিলেন মেরুন হরিয়াল। এই শিল্পীর বাড়িও চট্টগ্রাম জেলায়। আরো যাঁদের সংশ্লিষ্টতা বা সংস্পর্শ ছিল, তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কবি সবুজ তাপস। বাড়ি ফেনী জেলা। অবশ্য তিনি এখন একটি স্কুলে পড়ান। কবি ও আইনজীবি মঈয়ূন পারভেজ ও কবি জ্যোতিময় নন্দি। তাঁরা মূলত প্রæফ রাইটার ছিলেন। কম্পোজ ও শব্দ বিন্যাসে চম্পক দে এবং ‘দিব্য এ্যাড’, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম।
উপন্যাসের ১৯পৃষ্ঠায় নায়ক দ্বীপ নায়িকা নাভিলার উদ্দেশ্য বলেন, ‘দেখছ, বৃক্ষরা কেমন নীরবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে আমাদের সুখময়-ক্লেদাক্ত এই জীবন।’ দ্বীপের মুখে এ কথা শুনে নাভিলা হঠাৎ বলে উঠল, ‘বৃক্ষরা কি কথা বলে?’ নাভিলার এই প্রশ্নে দ্বীপ মুখের দিকে বিস্ময়ভরাদৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবতে থাকে- নাভিলার এ কেমন প্রশ্ন? একপর্যায়ে দ্বীপ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ‘হ্যাঁ, বলতে পারে।’ উপন্যাসে ২০পৃষ্ঠায় আরো বিস্তৃত বর্ণনা আছে। অথচ এ তথ্য বা তত্ত¡ প্রথম প্রকাশিত হয় এ গ্রন্থে। যা ছিল নিরব আশাব্যঞ্জক। এবং নিখাদ নিস্বর্গের টানে।
অথচ দেখা গেল তা উল্টো চিত্র। কথিত এক নিস্বর্গ প্রেমিক, ওই রাষ্ট্র দুটির পক্ষে সাফাই গেয়ে চট্টগ্রামের একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় আর্টিকেল লিখেন। আটিকেলর্টিতে প্রকাশ পায় তিনশ’ বছর পূর্বে আমেরিকার এক গবেষক ও লেখক তার গবেষণা গ্রন্থে তা লেখেছেন। তত্বটি আদৌ সত্য কিনা যথেষ্ঠ দালিলি প্রমাণাদি ছিল না। আবার কোনভাবেই এটি প্রমাণ করারও সুযোগ ছিল না। তবে এইটুকু বলতে পারি, আর্টিকেলটি বস্তুনিষ্ঠভাবে প্রকাশ ফেলে সর্বপ্রথম দেশ দুটির ওই গবেষকদের তত্ত¡’কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া হতো। তাহলে তো আর্টিকেটিতে প্রকাশ পেত দেশ দু’টির গবেষকরা মিথ্য-বানোয়াট তত্ত্ব প্রকাশ করেছে? দেখাযায়, ওই নিস্বর্গ লেখক অনেকটা নিরব ছিলেনÑ যখনি তৃতীয় বিশ্বের কোন এক আনকোরা-অখ্যাত ও অপরিচিত লেখক তাতে প্রতিবাদ জানান, তখনই তার গাত্রদাহ হয়। অনেকটা পাশ্চাত্যে ওই দুই দেশের পক্ষে সাফাই গেলেন; মোদ্দাকথা কে প্রথম, কে শীর্ষে রয়েছে; তা নিয়ে উপন্যাসের লেখক কখনো মাথা ঘামাননি। প্রথম হলে লেখকের কি হবে? দাবি যদি ন্যায্য হয়, তাহলে দেশ কেন মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হবে? ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডের আবিষ্কারকরা যেখানে গৌরবান্বিত বোধ বা অতি মর্যাদা-ভাবাপন্ন হয়; এছাড়া, রাষ্ট্র দুটি প্রকাশ্য সম্মতি দিতে কুণ্ঠিতবোধও করেননি। এটি বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্ধ ছাড় দিতে মোঠেই কার্পন্যবোধ করেনি দেশ দুটি। সেক্ষেত্রে আমরা কেন ন্যুনতম ন্যায্য পাওনা বা দাবি থেকে বঞ্চিত হবো?
দেশ ও জাতির বৃক্ষ প্রেমাসক্তি একেবারে যে কম, তা বলবো না; সেদিন এক বড়ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে তাজ্জব বনে যায়। তিনি চলতি বছরে জুনে অবসরে আসেন। চাকরি করেছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন পদে। সামসুল আলম বাংলাদেশ বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরকসহ বাংলাদেশ পারমাণবিক গবেষণা ইনস্টিটিউট এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিল। তিনি এখন নিরব-নিভৃতে অজপাড়া গাঁয়ে সময় অতিবাহিত করছেন। অবশ্য গ্রামটি অজপাড়া বলা যায় না। বর্তমানে এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। গ্রামে তাঁদের দালানবাড়ি ৪ তলা। আশপাশেও নজরে পড়ার মতো বেশ কয়েকটি ৫তলা দালান-ঘর রয়েছে। সীতাকুণ্ড পৌরসভার শহিদ হারুন আল রশিদ-এর বাড়ি। এলাকায় বাড়িটির বেশ নামডাকও রয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকসৈন্যরা তাঁকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। শহিদ হারুন আল রশিদ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। শহিদের ওই বাড়িতে যাওয়ার পথে আরো কয়েকটি আলিশান আলিশান ও দৃষ্টিনন্দন বিল্ডিং স্থায়ী দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু চলাচলে এলাকাটি সেকী চরম বেহাল দশা, রাস্তার চরবাগল ওঠে গেছে। গ্রামের মেঠো পথ থেকে বাড়িতে যাওয়ার রাস্তাটিও এখনো কাঁচা রয়ে গেছে। বর্ষামৌসুমে রীতিমত ঘর থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে ওঠে, অনেকটা কাঁদাজলে থৈথৈ।
যাক, যে কথা বলছিলাম। সামসুভাই বাগান পরিচ্ছন্ন করছিলেন। সঙ্গে চাচাতোভাই নুরুর নবীও রয়েছে। ৪ তলা ভবনের ছাদে সখ করে বাগান করেছেন। ত্থোকা ত্থোকা মালটা, কমলা ঝুলছিল। সব গাছ-ই কলব করা। ঘরের সামনে দেশীয় প্রজাতির আম গাছেও বারিজাতের কলব করা। যখন ইচ্ছে করে কলব করেই বসেন। এক ফাঁকে জানালেন, স্কুলে পড়াকালে কলব পদ্ধতি শিখা হয়। শেষতক চাকরি শেষে তা কাজে লেগেছে। পাক্কা একজন কৃষক বলা যায়। নিঃসঙ্গ জীবনে শয়নকক্ষে ডিসকভারি দেখেন। উন্নত দেশগুলোর চাষাবাদের ধরণ, ফলন ও বাজারজাতকরণের ব্যাপারস্যাপারসহ সকলপ্রকার আধুনিক প্রক্রিয়া দেখে দেখে উজ্জিবিত হন। আবারও বললেন, ‘আদি পেশা কৃষিই শ্রেষ্ট।’ সরাসরি উৎপাদন করার মজাই আলাদা।
একটি ঘটনা সকলের নজর কাড়েÑ সঙ্গে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠারও কমতি নেই, ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে। এ যুদ্ধ প্রায় ১০মাস হতে চলেছে, থামার কোন লক্ষণই দেখছি না। একচেটিয়াভাবে ইউক্রেন ঘায়েল হচ্ছে। অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইউক্রেনের কাঠামো-অবকাঠামো তছনছ করে দিচ্ছে। হাইরেস্ট বিল্ডিং গুলো নিমিষে মাটির সাথে মিশে দিচ্ছে, বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তিধর রাশিয়া। সে সাথে শহর ও বিদ্যুৎপ্লান ছিন্নবিচ্ছিন্ন প্রায়। রাস্তাঘাটেরও বেহাল দশা, বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। তবে তারা হিসাব কষেই বিধ্বংসী বোমা ছুটছে। ইউক্রেনের কৃষিজমি বা ফলজ বাগানের ওপর কোনপ্রকার ধ্বংসাত্বক আক্রমন করতে দেখা যায়নি। দেশটিতে এবারও গমের ভালো ফলন হয়েছে। বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ গম উৎপাদন ইউক্রেনে। মূলত দেশটির প্রধান আয়ের উৎস হলো কৃষি। গম, আলু, সরিষা, মাল্টা, কমলা ,আঙ্গুর ও আপেলের বড় বড় বাগান রয়েছে।
সামসুভাইয়ের বাগানে দেশী ফলমূল- ফুলকপি, বাঁধাকপি, বরবটি, বেগুন, টমেটো, থানকুনি, লটকন, এ্যালোভেরা চাষ করা হয়। পাশাপাশি অস্টেলিয়ার গুজবেরী, মিশরিয় ডুমুর, জার্মানে জৈতুন, থাইল্যান্ডের গাব, থাইল্যান্ডের রকেট সালাত, থাইল্যান্ডের জামরুল, চায়না থ্রি-লেচু, থাইল্যাণ্ডের ফিঙ্গার লেবন (ওষুধি) রয়েছে।
সুরজিত কান্তি দাস প্রকাশ শুনু মামা। তিনিও ছাদ বাগান করেছেন। সফেদা, ডালিম, জলপাই, কুল, কামরাঙ্গা, বাতাবিলেবু, জামরুল, জামবুরা, মাল্টা, কমলা, কামড়া, কাঠবাদাম, কাঁঠাল, আঁতা, শরিফা, বেল, তেঁতুল, কমলা আদা, লাল পেয়ারা ও কাজী পেয়ারা গাছ লাগিয়েছেন। ওষুধি গাছ থানকুনি পাতা, কালোহোনা, কুলেখাড়া, এ্যালোভেরা, স্যুপপাতা, কারিপাতা। কিন্তু মামার ফুল বাগানের প্রতি একটু দুর্বল। তিনি ছাদ বাগানে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটান। ক্ষাণিকটা চেরাগীর আড্ডায়ও দেখাযায়। তিনি ছোট-বড় সকলের শুনু মামা। শহিদ পরিবারের সন্তান। পিতা ডা. রমনী মোহন দাস, দ্বিজেন্দ্র লাল দত্ত, পুলক চৌধুরী, নারায়ণ সাধন দাসকে পাক সৈন্যরা সেইদিন ধরে নিয়ে হত্যা করে। চট্টগ্রামের কোতোয়ালীর ১১৪-এ দেওয়ানজীপুকুর পাড়ের শহিদ দ্বিজেন কুটির। বয়স প্রায় আশি ছুঁই ছুঁই। এ বীর মুক্তিযোদ্ধাও চিরকুমার। সামসুভাইও চির কুমার; তবে সামসুভাইয়ের বয়স যে ডের হয়েছে তা-না। মতিগতিও পাল্টাতে পারে; হয়তো বার্ধক্যতার চিন্তাভাবনায় এ সিদ্ধান্ত পাল্টানো উচিত তাকে। যাকগে, ওটি তাঁর একান্ত-ব্যক্তিগত বিষয়। অবশ্য দুই জনই শহিদ পরিবার। শহিদ অধ্যাপক হারুণ-আল রশিদ সামসুভাইর জেঠা। শেষতক মামাও বাগান দেখার আমন্ত্রণ জানালেন। একদিন সময়-সুযোগ করে মামার রকমারী ফুল ও ফলজ বাগান দেখে আসবো। সেদিন সামসুভাইয়ের বাগানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। তিনি ব্যাগভর্তি মাল্টা দিয়েছেন। আকারে ছোট হলেও টসটসে রসে ভরা। খেতেও বেশ মিষ্টি। বহু বছর পর অর্গানিক ফল মাল্টা খাওয়া হলো। অন্যরকম স্বাদ, এখনো মুখে লেগে আছে। এখানে-ই ফল বাগানের স¦ার্থকতা। বিষমুক্ত নিজের বাগানের ফল খাওয়ার তুলনাই হয় না।
মৌসুমী অঞ্চল হিসেবে আমদের দেশ শস্যভাণ্ডারে ভরপুর থাকার কথা; সবুজ-শ্যামল এ বাংলা। কি-না হয় এদেশের মাটিতে। একটু উদ্যোগ নিলেই হয়। একটি সিমের বিচি পুঁতে দিলে বাঁশের কঞ্চি বেয়ে লকলকিয়ে ওঠে, ত্থোকা ত্থোকা সিম ধরে ঝুলে থাকে। তবে দেশে এখনো প্রচুর অনাবাদি জমি পড়ে আছে। হয়তো একসময়ে চাষ হতো ওইসব জমিতেও। কেন-জানি, জাতিকে দেখা যাচ্ছে চাষাবাদে বিমুখতা। হয়তো উৎপাদনের ব্যয় বেড়েছে। আবার বাজারে কৃষিপণ্যের দামও কম। মধ্যেখানে মধ্যস¦ত্বভোগিরা হাতিয়ে নেয় অধিক মুনফা। তাই কৃষকদের মাথায় হাত। বাজার নিয়ন্ত্রনে আরো সচেষ্ট-সতর্ক হতে হবে। এতে করে চাহিদার তুলনায় যোগান অপ্রতুল। তার সাথে চলছে বৈশ্বিক পরিস্থিতি, যুদ্ধ। ক্ষণে ক্ষণে উৎকণ্ঠা। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যসহ দ্রব্যসামগ্রীর দাম। এ অবস্থায় স্নায়ু চাপও বাড়ছে। ছেলেপুলে-পরিবারপরিজন নিয়ে বেঁচে থাকলেইতো রাজনীতি। তার সাথে প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গার চাপ। তাদের চাহিদা মিটাতে হচ্ছে। তাদের বিষয়টিও মানবিক। কিন্তু মায়ানমারের জান্তা সরকারের উদ্ব্যত্যপূর্ণ আচরণ ভাবিয়ে তোলে। তারা বারবার সীমান্তে আগ্রাসন চালিয়ে নিরীহ জনগণকে হত্যা করে চলেছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকেও উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যায়। তিনি জাতিকে আগাম সতর্ক বাণী দিয়েই যাচ্ছেন। দেশে একখণ্ড জমিও-যেন খালি-অনাবাদি না থাকে। অন্তত নিজের আঙ্গিনায় হলেও কিছু না কিছু চাষাবাদ করার জোর দিয়েছেন তিনি। বাণিজ্যিক না হলেও নিজেদের চাহিদা মিটাতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর এ সত্যভাষনকে সাধুবাদ জানাতে হয়। তবুও পার্শ্ববর্তি দেশ শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি ভাবিয়ে তোলে। টাকা দিয়েও পণ্য পাননি দেশটির নাগরিকরা। তবে আমাদের দেশ সেই অবস্থায় উপনিত হবে না, তা শতভাগ নিশ্চয়তা রাখতে পারি। সাম্প্রতিক শেখ সেলিম এমপিও সেই আশার বাণী শোনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দেশ-জাতিকে বারবার সতর্ক করে যাছেন। তারপরও আমাদের পর্যাপ্তপরিমাণ খাদ্যসামগ্রী মজুদ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেই ব্যবস্থা করে রেখেছেন।

লেখক : কলামিস্ট ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক