বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধুই তরমুজ

38

কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপের তরমুজ যাচ্ছে কক্সবাজার জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বেলেমাটির কারণে এখানকার তরমুজ খুবই সুস্বাদু। এবারের মৌসুম তরমুজ চাষের উপযোগী হওয়ায় এবং ক্ষতিকর রোগ ও পোকার আক্রমণ না থাকায় তরমুজের সহনীয় আবহাওয়ায় বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে তরমুজ আর তরমুজ। নতুন স্বপ্নে বিভোর সোনাদিয়ার তরমুজ চাষিরা। যেখানে চোখ যাবে, সেখানেই তরমুজ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধুই তরমুজ। ভরা মৌসুমজুড়ে চলছে পরিচর্যা, কাটা, পরিবহন ও বাজারজাত করা নিয়ে চাষিদের ব্যস্ততা। যথাসময়ে ভোক্তার হাতে তুলে দিতেই চলছে তরমুজ নিয়ে ব্যস্ততা। এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
মহেশখালী উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহি উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে সোনাদিয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৯১ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হচ্ছে, তবে সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিমপাড়াতে বেশি চাষ হচ্ছে তরমুজের। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় প্রতি হেক্টরে প্রায় ৩০ মেট্রিকটন ফলনের সম্ভাবনা। মৌসুমি ফল তরমুজ আবাদে কক্সবাজার জেলায় শীর্ষ উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে পরিচিত উপক‚লের সোনাদিয়া দ্বীপ। পরিবেশ অনুক‚লে থাকায় এখানকার তরমুজের গুণগতমান ভালো হওয়ায় জেলাজুড়ে সুনাম ছড়িয়েছে। ফলে এ এলাকার তরমুজের চাহিদাও দিনদিন বাড়ছে। উপজেলার কুতুবজোমের সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিমপাড়া গ্রামের তরমুজ চাষি বেলাল উদ্দিন বলেন, সোনাদিয়া দ্বীপের তরমুজ খেতে সুস্বাদু, আকার বড় ও রঙ লাল টুকটুকে হওয়ায় কক্সবাজার জেলা শহরের ক্রেতাদের কাছে খুবই পরিচিতি লাভ করেছে। এ কারণেই এখানকার তরমুজের চাহিদা বেশি। এ বছর জমির পরিমাণে তরমুজের আবাদ কম হলেও বিগত বছরের চেয়ে ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করেন চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সবুজ রঙের মধ্যে দোল খাচ্ছে তরমুজের পাতা। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলের রঙ বদলে গেছে। দ্বীপের সর্বত্রই তরমুজের ছড়াছড়ি। কেউ ট্রলি থেকে তরমুজ নামিয়ে ঘাটে স্তূপ করছে। কেউবা ট্রলার বোঝাই করে তরমুজ উঠাচ্ছে। আবার বাজারজাত করতে ওইসব তরমুজ নৌযান বোঝাই করে প্রতিদিন বাঁকখালী নদী হয়ে কক্সবাজার জেলা শহরের অভিমুখে যাচ্ছে।
কৃষকরা জানান, এ রকম আবহাওয়া থাকলে এবার তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত এই অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হয়নি। বড় ধরনের কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে এ বছর তরমুজে লাভের আশা করছেন এ ব্যবসার সাথে জড়িতরা।
সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিমপাড়া গ্রামের তরমুজ চাষি হাজেরা বেগম বলেন, এ বছর এক একর জমিতে তরমুজের আবাদ করেছি। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার হাজার টাকা। ক্ষেতে প্রথম দিকে পোকায় অনেক চারা মরে গেছে। ইতোমধ্যে ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।
কুতুবজোম ইউনিয়নের কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ১ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি, এতে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে।
মহেশখালী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম বলেন, সোনাদিয়া দ্বীপসহ মহেশখালীর জমিগুলো তরমুজ আবাদে উপযোগী। এ কারণে ফলন ভালো হওয়ায় চাষিদের তরমুজ আবাদে আগ্রহ বাড়ছে। যারা আগাম তরমুজ চাষ করেছে তারা ভালো ফলন ও ভালো দাম পাচ্ছে। চাষিরা কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা চাইলে তাদের সরকারি নিয়ম মোতাবেক সহযোগিতা এবং পরামর্শ প্রদান করা হয়।