বিষাদে বিসর্জন দেবী দুর্গার

25

পূর্বদেশ ডেস্ক

করোনার সংক্রমণ কমে আসায় এ বছর চট্টগ্রামে শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুরু হলেও কুমিল্লার ঘটনার জেরে চট্টগ্রামে বিজয়া দশমীর দেবীদুর্গার বিসর্জনের দিন- বিদায়ে কিছুটা বিষাদের ছাপ পড়েছে। এতে বিলম্বিত হয় শারদীয় দুর্গা পূজার প্রতিমা নিরঞ্জন। এমনিতে দেবী দুর্গার বাপের বাড়ি ছেড়ে কৈলাশে ফিরে যাবার দিনটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অশ্রুসজল, আবেগঘন। এবার এর সাথে যুক্ত হল ভক্ত, পূজারী সকলের ক্ষোভ-বিক্ষোভও। এতে বিজয়া দশমীর আনন্দও কিছুটা ম্লান হয়ে পড়ে।
গতকাল শুক্রবার সকালে বিজয়া দশমীর বিহিত পূজা ও দর্পণ-বিসর্জনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর দুর্গা মন্ডপগুলোতে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। দুপুরের পর বিভিন্ন মন্ডপে দেবী দুর্গা ও লক্ষী, স্বরস্বতী, কার্তিক, গণেশ সহ সকল প্রতিমাকে পান, তেল ও সিঁদুর দিয়ে দেবী দুর্গার বিদায় পর্বের সূচনা হয়। এরমধ্যে জুমার নামাজের পর পরই নগরীর জেএম সেন হলের কেন্দ্রিয় দুর্গা মন্ডপে হামলা করে আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ থেকে মিছিল নিয়ে আসা একদল দুর্বৃত্ত। এতে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কথা বলে দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জন স্থগিত করে।
পরে বিষয়টি সমাধান করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা নেমে আসে। নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পর পর আবার প্রতিমা বিসর্জনের ব্যস্ততা শুরু হয়। এর ফলে বেলা আড়াইটা থেকে মহানগরের পূজামন্ডপগুলোর প্রতিমা বিসর্জনের কর্মসূচি থাকলেও তা শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে। সাধারণত নগরীর বেশিরভাগ প্রতিমা বঙ্গোপসাগরে বিসর্জন দেওয়ার রেওয়াজ থাকলেও এবার রাত হয়ে যাওয়ায় মন্ডপের কাছাকাছি পুকুর, দিঘিতেও কিছু কিছু মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় চড়ে এসেছিলেন। কৈলাশে শিবালয়ে ফিরলেন পালকিতে চড়ে। বিদায়বেলায় মেঘাছন্ন আকাশে ছিল ঝড়-বৃষ্টি-মেঘ-বিজলির আনাগোনা। যেন দেবীদুর্গার বাপের বাড়ি ছেড়ে যাবার কষ্টের বার্তা সেটা। তবে পরের বছর শরতে ফের তিনি আসবেন মর্ত্যে, তার বাপের বাড়িতে।
চট্টগ্রাম নগরীতে এ বছর প্রায় ২৭৬টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সবকিছু শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
নবরাত্রির ষষ্ঠ দিন সোমবার দুর্গ পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছিল এ বছর। অষ্টমীর দিন বুধবার কুমিল্লায় কথিত কোরান আবমাননার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কয়েকটি জেলায় মন্ডপে-মন্দিরে হামলা-ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।