বিমানবন্দর-বারিক বিল্ডিং সড়ক হবে প্রধানমন্ত্রীর নামে

31

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নির্বাচিত পরিষদের ৫১তম সাধারণ সভায় নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। সভায় চসিকের প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেমসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানবৃন্দ এবং নগরীর সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন চসিকের সচিব আবু সাহেদ চৌধুরী।
সভায় নগরীর ব্যস্ততম বিমানবন্দর থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত সড়কটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। গতকাল রবিবার সকালে চসিকের সাধারণ সভায় সিটি মেয়র এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে এই প্রস্তাব উত্থাপিত হলে সভায় উপস্থিত সকলে এতে সম্মতি দেন। সিটি মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট রোডকে নান্দনিক সাজে সাজানো হচ্ছে। বর্তমানে এ সড়কে ৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই রোডের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। কাজের মধ্যে রাস্তার দৃষ্টিনন্দন ফুটপাত, রাস্তার পাশে সৌন্দর্যকরণ, চার লেইনে রাস্তা নির্মাণ চলমান রয়েছে। এছাড়াও বিউটিফিকেশন কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে নৌকার ওপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ম্যুরাল। দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাটি এই বিমান বন্দর দিয়ে আসা দেশ-বিদেশের অতিথিদের স্বাগত জানাবে বলে সিটি মেয়র উল্লেখ করেন।
এয়ারপোর্ট রোডের সৌন্দর্যবর্ধনের কথা উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন, এই সড়কে তিনটি সেতু রয়েছে। সেতুগুলো ঘিরে ব্যাপক সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করছে চসিক। সেতুর ওপর এলইডি বাতি মুগ্ধ করছে দেশ-বিদেশের অতিথিদের। সড়ক বিভাজনকে সবুজ, রকমারি ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। ফুটপাতের পাশেও রয়েছে বাহারি ফুলের মেলা। রুবি সিমেন্টের পাশের সেতুটিতে এলইডি বাতির কাজ হয়েছে। সিটি মেয়র জানান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয় মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি বিরোধী সমাবেশ। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে এ সমাবেশ এবং কমিটিও গঠিত হয়েছে। আর প্রতিটি কমিটি তাদের এলাকায় কারা সন্ত্রাসী, মাদকসেবী, জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে- তার একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ ওয়ার্ডে প্রণীত তালিকা আইন শৃঙ্খলা স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানের বরাবরে জমা হয়েছে। আর যে সমস্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলররা মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের তালিকা জমা দেয়নি, তাদেরকে আগামি ৫ কার্যদিবসে তালিকা জমা দেয়ার আহবান জানান মেয়র। তিনি বলেন, জমাকৃত এই তালিকা বিভিন্ন এজেন্সীতে প্রদান করা হবে। আগামি নভেম্বর মাসে নগরীতে বড় আকারে মাদক-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশ করা হবে বলেও তিনি জানান।
সভায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উদ্যাপন, এই উপলক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে খতমে কোরআন, মিলাদ মাহ্ফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন, নগরীর বহদ্দারহাট হতে বারেক বিল্ডিং পর্যন্ত সড়কে পে-পার্কিং ও ফ্রি পার্কিং এলাকা চিহ্নিতকরণ, সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, রক্ষণাবেক্ষন তালিকাভুক্ত অবকাঠামো ও সম্পদসমূহের জন্য বার্ষিক ও অ্যান্ড এম পরিকল্পনা তৈরি, বার্ষিক বাজেটের হিসাব ও চাহিদাকরণ বিষয়ে আলোচনা, স্থাপনা, ব্রিজ, অস্থায়ী পারাপার সেতু, দোকান, বাজার ইত্যাদি লীজ বা অর্থের বিনিময়ে নির্মাণ/স্থাপনের অনুমতি প্রদানের পূর্বে রাজস্ব বিভাগ কর্তৃক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মতামত গ্রহণ, চট্টগ্রাম মহানগরীর যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগের সাথে কর্পোরেশনের সমন্বয় করে সুশৃঙ্খল গণপরিবহনের পরিকল্পনা গ্রহণ, ৮টি স্থানে ফুটওভার ব্রিজ, মেয়র গোল্ডকাপ উপলক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যালির আয়োজন নিয়ে বিস্তারিত আালোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় অর্থ ও সংস্থাপন, শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্য রক্ষা, নগর অবকাঠামো নির্মাণ ও সংরক্ষণ, আইন শৃঙ্খলা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ, যোগাযোগ, দারিদ্র হ্রাসকরণ ও বস্তি উন্নয়ন, নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, সমাজকল্যাণ ও কমিউনিটি সেন্টার, হিসাব নিরীক্ষা ও সংরক্ষণ স্ট্যান্ডিং ও নামকরণ উপ-কমিটির চেয়ারম্যানগণ স্ব স্ব কমিটির কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন এবং এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সভার শুরুতে নগরীতে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাদ্রাসা পরিদর্শক মাওলানা হারুণ-উর-রশিদ চৌধুরী।