বিপন্নপ্রায় উল্লুক ধরে বিক্রয় চেষ্টা : ২ ব্যক্তি আটক

8

লোহাগাড়া প্রতিনিধি

লোহাগাড়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে পাচারের সময় বিপন্ন প্রজাতির একটি উল্লুকসহ দুই পাচারকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাদেরকে এক বছরের জেল এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরীফ উল্যাহ’র নেতৃত্বাধীন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার চুনতি ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে চট্টগ্রাম অভিমুখি একটি যাত্রীবাহী বাসে অভিযান চালিয়ে উল্লুকটি উদ্ধার করা হয়। বান্দরবানের আলীকদম থেকে ধরে আনা উল্লুকটি চট্টগ্রামের রিয়াজুদ্দিন বাজারে নিয়ে যাচ্ছিলেন পাচারকারীরা।
আটক দুই পাচারকারী হলেন কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেয়াবাদ এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে মুবিন (৩০) এবং একই জেলার দাউদকান্দি পেন্নাই এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে মো. মাজহারুল হক (৩৫)। তারা দুইজনই নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজারের নাইস বার্ড গার্ডেন নামের একটি দোকানের কর্মচারী বলে জানা গেছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে উপস্থিত ছিলেন লোহাগাড়া থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান, চুনতি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো. সাজিব হোসেন, চুনতি ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জনু ও চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাহমুদ হোসেন প্রমুখ।
লোহাগাড়া থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, অভিযান চালিয়ে বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী একটি উল্লুক উদ্ধার ও দুই পাচারকারীকে আমরা আটক করেছি।
চুনতি বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন বলেন, উদ্ধারকৃত প্রাণীটি ওয়েস্টার্ন হোলক গিবন বা পশ্চিমা উল্লুক প্রজাতির একটি পুরুষ উল্লুক। এটি মূূলত গাছের মগ ডালে থাকে। ওইখানেই ঘোরাফেরা, খাবার ও বসবাসসহ সবকিছুই করে। এরা ফল-মূল ও পোকামাকড় খেয়ে জীবনধারণ করে। প্রাণীটি বিপন্ন প্রজাতির। বাংলাদেশের মুষ্টিমেয় কয়েকটি বনাঞ্চলে এটি দেখা যায়। প্রাণীটি ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এদের বসবাস যেখানে ওই বনাঞ্চলেই অবমুক্ত করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ উল্যাহ বলেন, আটককৃত ব্যক্তিরা স্বীকার করেন, তারা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে উল্লুকটি নিয়ে যাচ্ছিলেন। বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ এর ৩৪ (খ) ধারা অনুযায়ী এভাবে বণ্যপ্রাণী ক্রয়-বিক্রয় এবং আমদানি-রপ্তানি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তারা অপরাধ স্বীকার করায় প্রত্যেককে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড প্রদান এবং অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।