বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়

8

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল ঈদ ছুটিকে কেন্দ্র করে। ঈদ-আনন্দের মাঝে বিনোদন খুঁজতে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। বিশেষ করে নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল সবচেয়ে বেশি ভিড়। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা তথা ফয়’স লেক ছিল লোকারণ্য। এছাড়া নেভাল সমুদ্র সৈকত, আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকত, ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, কাজির দেউড়ি শিশু পার্ক, আগ্রাবাদ কর্ণফুলী শিশু পার্ক, কালুরঘাট স্বাধীনতা পার্ক, বাঁশখালীর বামের ছড়ায় ছিল দর্শনার্থীদের ভিড়। যান্ত্রিক জীবনে ‘ব্যস্ততার কারণে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তেমন কোথাও যাওয়া হয়ে ওঠে না নগরবাসির। তাই ঈদের বন্ধে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে এসেছেন বলে জানালেন মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যবসায়ী। সৈকতের পাশাপাশি আউটার রিং রোডও এখন বিনোদনের অনন্য স্থান হয়ে উঠেছে বলেও জানান এই ব্যবসায়ী।
এই বিষয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. ইস্রাফিল মজুমদার বলেন, আমরা বিনোদন প্রেমিদের নিরাপত্তায় সতর্ক ছিলাম। যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় ঈদের ছুটিতে ২৫-৩০ হাজার দর্শনার্থী এসেছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।এদিকে বাঁশখালী বামের ছড়া ও সাগর লাগোয়া সৈকত, আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকতেও বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ভিড় করেন। সোমবার সকাল থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী আসতে থাকেন। যা ঈদের পর দু’দিন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এখানকার দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় ছিল স্থানীয় থানা পুলিশ।
অন্যদিকে নগরীর চিড়িয়াখানায় ছিল সব বয়সী মানুষের ভিড়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১৬ হাজার দর্শনার্থী প্রবেশ করেন চিড়িয়াখানায়। এখানে নানা প্রজাতির অসংখ্য পশু-পাখি এবং বাঘ সিংহ, হরিণ, সাপ, কুমির, জেব্রা দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। তার ওপর এখানে পাহাড়ের ঢালে নির্মিত সিঁড়ি বিনোদনপ্রেমীদের কাছে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আছে শিশুদের জন্য দোলনাসহ বিভিন্ন রাইড। মাত্র ৫০ টাকা প্রবেশ ফি দিয়ে দীর্ঘ সময় কাটানোর সুযোগ থাকায় বরাবরের মতো এবারও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চিড়িয়াখানায়।
এই বিষয়ে চিড়িয়াখানার চিকিৎসক ও ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ জানান, ‘ঈদের প্রথম দিনের চেয়ে সোম ও মঙ্গলবার দর্শনার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। একদিনেই প্রায় ১৬ হাজার দর্শনার্থী টিকিট কেটে চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেছেন। আরও ক’দিন ভিড় থাকবে। চট্টগ্রামের একমাত্র চিড়িয়াখানা হলেও এখানে বিভিন্ন ধরনের পশু-পাখি আছে। আছে বিরল প্রজাতির সাদা বাঘ। আছে মায়া হরিণসহ এক ঝাঁক অজগর সাপ। বানরের দুষ্টুমিও আনন্দ দেয় শিশুদের। সব বয়সের মানুষের ভিড়ে লোকারণ্য ছিল চিড়িয়াখানা। একইসাথে ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও সি-ওয়ার্ল্ডেও ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। এখানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা লেকে নৌকা নিয়ে ভ্রমণ, কেউ সুবিশাল সুইমিং পুলে নেমে পানিতে গা-ভাসাতে দেখা গেছে। সুইমিং পুলে নেমে অনেককেই গানের তালে তালে নাচতেও দেখা যায়।
এই বিষয়ে কনকর্ড ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ডেপুটি ম্যানেজার (মার্কেটিং) বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, আমরা যা আশা করেছিলাম তার চেয়েও বেশি দর্শনার্থী এসেছে একদিনে। এখানে থাকা সবগুলো বোট সচল রয়েছে। এ কারণে লেকে ভ্রমণেও কোনও সমস্যা হয়নি। এখানে রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। এবার আবহাওয়া ভালো হওয়ায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়।
এদিকে নিরাপত্তার বিষয়ে পতেঙ্গা থানার ওসি কবীর হোসেন বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ছিল। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।