বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনের ’বিকল্প’ হতে পারে বাংলাদেশ

13

চীনের সঙ্গে ব্যবসায়িক বিরোধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ’বিকল্প’ গন্তব্য হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায়) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওয়ের সঙ্গে এক ফোনালাপে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ’অপূর্ব পরিবেশ রয়েছে’ বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
প্রায় ৪০ মিনিটের ওই ফোনালাপের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে।
টেলিফোন আলাপে মোমেন বলেন, চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্র অনেক ক্ষেত্রেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ব্যবসায়ী সম্পর্ক ছিন্ন করছে। সেই শূন্যতা কাটিয়ে উঠতে চীনের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগেরও যে ‘অপূর্ব’ পরিবেশ বিরাজ করছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র ‘অবাধে’ বিনিয়োগ করতে পারে।
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বলেন, এসব বিষয় দেখাশোনা করে যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্স।
বাংলাদেশ যেন তাদের সঙ্গে এ নিয়ে কার্যকর আলোচনা শুরু করে।
রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন ও তাদের ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থতার জন্য মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের আহব্বান ফোনালাপে জানিয়েছেন মোমেন।
সেইসঙ্গে মিয়ানমারের জিএসপি সুবিধা বাতিলের প্রসঙ্গও পম্পেওয়ের সামনে উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর জবাবে সরাসরি কিছু না বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এসব বিষয় ‘অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ’।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঠাঁই দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের উদারতার প্রশংসাও করেন পম্পেও।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটে মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত ৮২০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে বাংলাদেশকে।
রোহিঙ্গারা যাতে সম্মানের সঙ্গে নিরাপদে মিয়ানমারে তাদের বসতভিটায় ফিরতে পারেন, সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করার বিষয়েও আলোচনায় একমত হন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তৈরি পোশাক খাতের অর্ডার বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে মোমেন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো তাদের আগের অর্ডার বাতিল করেছে। এটি খুবই ‘দুঃখজনক’ ঘটনা।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য-সামগ্রীর শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার অনুরোধ জানান মোমেন।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় পরস্পরের সহযোগী হয়ে কাজ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সঙ্গে ইউএস-বাংলাদেশ বিদ্যমান সম্পর্ক অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৪৩ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে জানিয়ে পম্পেও বলেন, ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগে বাংলাদেশের সাড়া এবং চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা-সরঞ্জাম যোগানোর বিষয়টি ‘সর্বত্র প্রশংসিত হচ্ছে’।
মোমেন ফোনালাপে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদপ্রাপ্ত খুনী রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আহŸান জানালে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন পম্পেও। খবর বিডিনিউজের