বিধিনিষেধে কাশ্মিরে মানবাধিকার ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা জাতিসংঘের

18

কাশ্মিরে ভারত সরকার কর্তৃক বিপুল সেনা-সমাবেশ ঘটানোর পাশাপাশি সেখানে বিধিনিষেধ আরোপের কারণে সেখানকার মানবাধিকার ক্ষুন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সেখানে চলমান পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, এমন যেকোনও পদক্ষেপ নেওয়া থেকে ভারত ও পাকিস্তানকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস। সিমলা চুক্তির কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, কোনও তৃতীয়পক্ষ ছাড়াই এই সংকট নিরসন সম্ভব। সোমবার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।
এদিকে জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে একটি বিলও পাস করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরজুড়ে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত সেনা। পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের কাশ্মির ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার পর গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানকার শতাধিক স্থানীয় নেতাকে। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
ভারতের এই পদক্ষেপকে অবৈধ উল্লেখ করে পাকিস্তান জানিয়েছে বিষয়টি তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করবে। জাতিসংঘের মহাসচিব জানান, এমন কোনও পদক্ষেপ কারও নেওয়া ঠিক হবে না যেখানে কাশ্মির পরিস্থিতির অবনতি হয়। বৃহস্পতিবার তার মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক এক বিবৃতিতে বলেন, ভারত-সীমান্তবর্তী কাশ্মিরের ওপর চলা বিধিনিষেধ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গুতেরেস। ভারত সরকারের আরোপিত বিধিনিষেধের কারণে সেখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। দুজারিক নির্দিষ্ট করে বলেন, ১৯৭২ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শিমলা চুক্তি হয়েছিলো। সেখানে জাতিসংঘের আইন মেনে জম্মু ও কাশ্মিরের সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে কথা বলা হয়েছিলো।
জাতিসংঘ মহাসচিব কাশ্মির ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব না দিয়ে সিমলা চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের ব্যাপারে জাতিসংঘ তার সনদ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। এর আগে বুধবার টুইটারে প্রকাশিত ভিডিও বার্তায় কাশ্মিরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আগের উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র। বর্তমান অচলাবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ওই বার্তায় বলা হয় তা কাশ্মিরের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে দেবে। তিনি বলেন, টেলিযোগাযোগ যেভাবে বন্ধ করা হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে হয়তো এর আগে এমন কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেখিনি।
জাতিসংঘের এই মুখপাত্র বলেন, এর মাধ্যমে জম্মু কাশ্মিরের ভবিষ্যত মর্যাদার প্রশ্নে কোনও গণতান্ত্রিক বিতর্কে অংশ নেওয়া থেকে সেখানকার জনগণকে বিরত রাখা হবে। ভারতের দাবি, জম্মু ও কাশ্মির ভারতের অংশ তাই এই ইস্যুটি সম্পূর্ণই তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।