বিদেশ যেতে জমি বিক্রি নয়, ব্যাংকঋণ নেওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

14

পূর্বদেশ ডেস্ক

বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কেউ যাতে প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিদেশ যেতে জমি বিক্রি নয়। এ ক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরকে এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি প্রবাসী শ্রমিকদের প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ করতে এবং চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে এ সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য সহজলভ্য করতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।
বৈঠকের পর সচিবালয়ে সংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিদেশে যারা যাবেন তাদের সমস্ত প্রক্রিয়া নির্ভুল ও স্বচ্ছ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এ ব্যাপারে গণমাধ্যম- টেলিভিশন, রেডিও এবং সংবাদপত্রে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেন-যাতে করে চাকরি (প্রত্যাশীরা) সঠিক তথ্য পায় এবং বিদেশে যাওয়ার প্রকৃত ব্যয় সম্পর্কে জানতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা চাকরি প্রত্যাশীদেরও বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে বলেন। যেহেত ব্যাংক সঠিক নিয়োগপত্র ছাড়া ঋণ দেয় না- তাই তারা নিরাপদ থাকবেন, এতে করে প্রবাসীরা প্রতারিত হবেন না। খবর বাসসের।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বিদেশে চাকরির জন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের কোনোক্রমেই যেন অতিরিক্ত অর্থ দিতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদেশ নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি চাকরি প্রত্যাশীদের মন্ত্রণালয় এবং এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে বিদেশ যেতে বলেন। কারণ, অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক তাদের চাকরি সম্পর্কে কিছু না জেনেই দালালদের কথায় প্রভাবিত হয়ে তাদের খপ্পরে পড়ে সরাসরি অর্থ পরিশোধ করে বিদেশ যান। সভায় এ ধরনের কিছু ঘটনা সম্পর্কেও আলোচনা হয়।
তিনি আরো বলেন, যদি তারা জমি বিক্রি না করে ব্যাংক থেকে ঋণ নেন, তবে তাদের নিয়োগ সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংক তাদের অর্থ দেবে না। তাই তারা নিরাপদ থাকবেন।
সচিব বলেন, কিছু বাংলাদেশি ৩-৪ লাখ টাকা ব্যয় করে মালয়েশিয়া যান, কিন্তু দুই বছরেও তারা সেই টাকা উপার্জন করতে পারেন না এবং খালি হাতে দেশে ফিরে আসেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ ১০০টি শিল্প অঞ্চলে কয়েক লাখ শ্রমিক প্রয়োজন হবে উল্লেখ করে চাকরি প্রত্যাশীদের এই বিষয়টিও অবহিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিদের্শনা দেন। এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো নির্মিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাকরি প্রত্যাশীরা শিল্প অঞ্চলগুলোতে কি ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে- তা জেনে যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে দেশেই ভাল উপার্জন করতে পারবেন।
বৈঠকে মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন আইন, ২০২২-এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে যাতে করে কর্পোরেশনকে একটি সমযয়োপযোগী আইনের আওতায় পরিচালনা করা যায়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কর্পোরেশন ‘ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৫৯’-এর অধীনে পরিচালিত হয়। এখন একটি হালনাগাদ আইন করার জন্য প্রস্তাবিত আইন আনা হয়েছে।
বৈঠকে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সম্পদ যথাযথভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় প্রণীত বাংলাদেশ জাতীয় সংরক্ষণ কৌশল ২০২১-২০৩৬-এর খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এতে ১০-১২টি মন্ত্রণালয় জড়িত, যারা আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য কৌশল অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিয়মিত বৈঠক করবে।
এছাড়া, সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে মন্ত্রিসভা আমদানি নীতি আদেশ, ২০২২-২০২৫ অনুমোদন করেছে।
নীতিমালা অনুযায়ী খুচরা বিক্রেতারা এলসির পরিবর্তে টিটি (টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার অফ মানি)’র মাধ্যমে ০.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ০.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করতে পারবেন।