বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

51

মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ত্রিশ লাখ শহীদ আর দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত মহান বিজয়। বাঙালির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালি। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খন্ড আর জাতীয় পতাকা।
ডিসেম্বর, অহংকার আর গৌরবের মাস। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরেই সূচনা হয় বাঙালির নবজীবনের। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পরাভূত হয় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। বিশ্বের বুকে আবির্ভূত হয় একটি জাতি-রাষ্ট্র বাংলাদেশ। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এ বাংলাদেশের আছে নানা অর্জন, আছে নানা চ্যালেঞ্জ।
বাঙালির জাতীয়তাবোধের উন্মেষের সুদীর্ঘ ইতিহাসে অবিস্মরণীয় মাস ডিসেম্বর। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এ দেশের মানুষ। ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম আর ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে আসে জাতীয় মুক্তি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল ১৬ ডিসেম্বর। তবে এ ডিসেম্বর মাসেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-আল-শামস বাহিনীর সহযোগিতায় জাতির মেধা, শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। পুরো জাতিকে মেধাহীন করে দেওয়ার এমন ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের নজির বিশ্ব ইতিহাসে আর নেই। এ কারণে বাঙালি বিজয়ের মাসটি উদযাপন করে একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনায়।
প্রতিবছর বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নানা অনুষ্ঠানে মাসজুড়ে বিজয়ের আনন্দ উদযাপন করে বাংলাদেশ। লাল-সবুজের পতাকা ওড়ে দেশের আনাচকানাচে। তবে এবার বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আনুষ্ঠানিক উৎসব আয়োজনে ছেদ পড়েছে।
এবার বিজয় দিবস এসেছে এমন এক সময়ে, যখন দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। অন্ধকারের অপশক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এ অপশক্তিকে মোকাবেলার ডাকও এসেছে। একই সাথে এ লক্ষ্যে প্রস্তুতিও নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি।