বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

9

পূর্বদেশ ডেস্ক
১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর। চারদিকে উড়ছে বাঙালির বিজয় নিশান। বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। ঢাকাকে চারদিক ঘিরে রেখেছে মিত্রবাহিনী। একমাত্র ঢাকা ছাড়া গোটা দেশ মূলত শত্রæমুক্ত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের অভ্যুত্থান ঠেকাতে না পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে পাকবাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার ও আল বদরবাহিনী ঘৃণ্য-বর্বর ষড়যন্ত্র এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে থাকে। গোপনে চালাতে থাকে শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে নিষ্ঠুর ও নির্মম কায়দায় হত্যাযজ্ঞ।
এদিকে যুদ্ধজয়ের নিশ্চিত সম্ভাবনা দেখে মিত্রবাহিনী যুদ্ধের কৌশল পরিবর্তন করে। কারণ তারা জানমালের ক্ষতি কম করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আত্মসমর্পণের দিকে নিয়ে যায়। ঢাকা দখলই একমাত্র লক্ষ্য। রাতে টাঙ্গাইলে এক আলোচনায় মিত্রবাহিনীর মেজর জেনারেল নাগরা মুক্তিবাহিনীর উচ্ছ¡সিত প্রশংসা করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যদি আমাদের এতোটা পথ পাড়ি দিতে সাহায্য না করতেন, তাহলে আমাদের বাহিনী দীর্ঘ রাস্তায় যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়তো।
এদিন চতুর্থ বেঙ্গল রেজিমেন্ট চট্টগ্রামের দিকে এগোনোর পথে নাজিরহাটে হানাদাররা বাধা দেয়। এখানে ব্যাপক যুদ্ধের পর পালিয়ে যায় হানাদাররা। বিভিন্ন এলাকা পাকিস্তানি দখলমুক্ত হওয়ায় রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন অবরুদ্ধ জনতা। যারা বাড়িঘর ছেড়ে দূর-দূরান্তে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেন।
এদিন ঢাকায় আটকে পড়া পাকবাহিনীর সদস্যরা আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। আত্মসমর্পণের বিষয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার জেনারেল নিয়াজি তার সহকর্মীদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান রক্ষা করবে বলে যে আশা ছিল পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের, তা সুদূরপরাহত হয়েই থাকল।