বিএনপি-জামায়াত ঢাকায় বড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল : তথ্যমন্ত্রী

16

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদ সদস্য হতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাওয়া নিয়ে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নায়ক-নায়িকাদের মনোনয়ন চাওয়া দোষের কিছু নয়।
গতকাল দুপুরে নগরীর দেওয়ানজী পুকুরপাড়ে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়ের সময় প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন। সংসদ থেকে বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের পর শূন্য হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে, যাতে যোগ দিচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরাও। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নীতি, মতাদর্শে বিশ্বাস করে, এমন যে কেউ নমিনেশন চাইতে পারে। চিত্রজগতের কোনো নায়ক-নায়িকা চাইলেও সেটি অপরাধ নয়। পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতবর্ষে মিডিয়া জগতের অনেককেই নির্বাচনে নমিনেশন দেওয়া হয়। অবশ্যই আওয়ামী লীগের নমিনেশন পাওয়া পোড়া খাওয়া নেতাকর্মীদের অধিকার। কিন্তু এর পাশাপাশি দলকে আরও অনেক বিষয় বিবেচনায় নিতে হয়।
বিদেশিদের পদলেহন করে বিএনপির কোনো লাভ হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপি মনে করেছিল বিভিন্ন রাষ্ট্র বা দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের পক্ষে নানা ধরনের কথা বলবেন, কিন্তু সেটি হয়নি। তাদের রাজনীতিটা একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। দেশে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা ছিল তাদের উদ্দেশ্য। দেশের জনগণ সেটি কোনোভাবেই হতে দেবে না।’
ঢাকায় গণমিছিলের নামে বিএনপি বিশঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি বুঝতে পেরেছে তাদের সঙ্গে জনগণ নেই। দশ লাখ মানুষের সমাবেশ করবে বলে তারা সেখানে বড়জোড় ৫০-৬০ হাজার মানুষ জমায়েত করতে পেরেছে। এরপর থেকে বিএনপি হতাশ। তাদের রাজনীতির পুরোটাই ষড়যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল। সেজন্যই গণমিছিলের নামে বিএনপি-জামায়াত ঢাকা শহরে বড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানের কারণে তা সম্ভব হয়নি। এরপরও বিএনপির প্রধান সহযোগী জামায়াত ইসলামী পুলিশের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ বাহিনী ধৈর্যের সঙ্গে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপির নাশকতা আমরা মোকাবিলা করেছি। বিএনপি কী করতে চায়, কতটুকু করতে পারে আমরা জানি। সেটা মোকাবিলা করার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কী করতে হবে, সেটাও আমরা জানি। সুতরাং বিএনপি আগের পরিস্থিতি আর কখনো সৃষ্টি করতে পারবে না।
বিএনপির রাজনীতি আবার ২০১২-১৩ সালের সন্ত্রাস-নাশকতার দিকে যাচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের রাজনীতি একই জায়গায় আছে। গত ডিসেম্বরেও তারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এখনও সুযোগ পেলে একই কাজ করবে। তারা সেখান থেকে সরে আসতে পারেনি।’
পদ্মাসেতু-মেট্রোরেল নিয়ে বিএনপির ধূম্রজাল সৃষ্টির অপচেষ্টা মানুষের উচ্ছ¡াসের কারণে নস্যাৎ হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় হাছান মাহমুদ বলেন, কত নম্বর সেটা বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যখনই যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সে দায়িত্ব আমি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছি। আমি দশ বছর দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, সাত বছর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তিন বছর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম।
আমার নেত্রী আবারও আমাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমার দল আওয়ামী লীগ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। এখন আমার দায়িত্ব হচ্ছে নিজেকে উজাড় করে দলের জন্য কাজ করা, প্রয়োজনে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়াতে হলেও দাঁড়ানো এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা।