বিএনপিকে ইসির চিঠি কেন জানালেন সিইসি

5

ঢাকা প্রতিনিধি

সংলাপ নয়, অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের জন্য বিএনপিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা জানান।
সিইসি বলেন, অনানুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকের জন্য বিএনপি মহাসচিবকে একটি চিঠি দিয়েছিলাম যে, আপনারা অনানুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে পারেন-এভাবে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় চিঠিটা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে চিঠিটা তারা পেয়েছেন। এই পত্রের সঙ্গে সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই জানিয়ে সিইসি বলেন, অনেকে বলছেন এটি সরকারের কূটকৌশল ছিল। আমরা সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই যে এটির সঙ্গে সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিলো না।
তিনি আরও বলেন, পত্রটি আমাদের এখান থেকে গেছে, সরকারের পরামর্শ অনুযায়ী নয়। আমরা সরকারের আজ্ঞা বহন করিনি। আমাদের চিন্তার মধ্য দিয়ে এটা ফুটে উঠেছে, বিএনপির মতো একটি দলকে নির্বাচনে আনতে পারলে ভালো হয়। আমরা বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। আলোচনার ফল ইতিবাচক হতেও পারে, না-ও হতে পারে। প্রয়াস গ্রহণ করতে তো কোনো বাধা থাকা উচিত নয়।
সিইসি বলেন, আমরা শুরু থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে আসছি। গত ২৩ মার্চ বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে পাঠানো চিঠিতে সিইসি লেখেন, ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি।
নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে সেটা নিয়ে আলোচনা হলে বিএনপি ইসির সঙ্গে কথা বলবে- এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, যেহেতু আমি চিঠি দিয়েছি। যেকোনো রেসপন্স আমাকে চিঠির মাধ্যমেই পেতে হবে। গণমাধ্যমে অনেকের বক্তব্য শুনেছি সেই কারণে আমি বললাম, অনেকে এই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। যেহেতু আমরা বিএনপি মহাসচিবকে চিঠি দিয়েছি, তাদের বক্তব্য চিঠির মাধ্যমে আসা কাক্সিক্ষত। এরপর আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত নেব।
তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক এবং কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি। নির্বাচন কমিশন মনে করে, গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং দলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে বিশেষ করে দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। সংসদীয় গণতন্ত্রে দলীয় শাসনটাই মুখ্য। বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্রপ্রার্থী দ্বারা কখনো সরকার গঠন করা সম্ভব হয় না। সেই জন্য আমাদের লক্ষ্য, আমাদের দলগুলো চর্চার মাধ্যমে আরও সমৃদ্ধ, সংহত হোক এবং দেশে দলীয় চর্চা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার আরও সংহত হোক।
বিএনপির সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা যদি আসেন, কী আলোচনা হবে সেটা সেই সময় আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠবে। উনারা কী বললেন, আমরা কী বলবো। এই বিষয়ে আগাম কোনো বক্তব্য, আগাম কোনো ধারণা দিতে পারছি না।
এ সময় সিইসির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান, মো. আলমগীর, রাশেদা সুলতানা ও আনিছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।