বাস-ট্রেনে ডাকাতি বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন

37

দেশে ডাকাতি দীর্ঘ দিন থেকে কমে এসেছিল। কক্সবাজার, মহেশখালী, কুতুবদিয়া উপকূল এবং বাঁশখালী সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় জলদস্যুদের উৎপাতও পূর্বের তুলনায় কমে এসেছে। স্থলাভাগে ঘর ডাকাতির কথাও তেমন শুনা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন থেকে বাস-ট্রেন ডাকাতির কথাও তেমন শুনা যাচ্ছে না। জলদস্যুরা তো কয়েক দফায় আত্মসমর্থন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে অনেকেই। এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ডাকাতি আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও সংশ্লিষ্টদের নতুন করে মহাসড়কের বাস এবং ট্রেন যাত্রীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে ভাবতে হচ্ছে। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন হতে জানতে পারি, শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে ৭-৮ জনের সশস্ত্র ডাকাতদল সৌদিয়া পরিবহনের মতো অভিজাত পরিবহনে সহজেই উঠে গেলো এমন একটি বিষয় যাত্রী সাধারণের সড়ক পথে যাতায়াতে দুঃচিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। টিকেট কাউন্টার হতে একযোগে ৭-৮জন যাত্রী টিকেট চাইলে তাদের গতিবিধি সম্পর্কে কাউন্টারে অবস্থানরত বাস কর্তৃপক্ষের লোকজনের সতর্কভাবে টিকেট প্রদান করা প্রয়োজন। এক সাথে অনেক যাত্রী কোথায় যাবে, কি উদ্দেশ্য এবং তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ খুবই জরুরি। এস আলম, সৌদিয়া সারাদেশ এবং দেশের বাইরে কলকাতায়ও আসা যাওয়া করে থাকে। যে কোন অভিজাত লাক্সারি বাসের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে প্রথমেই যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে ভাবতে হয়। কাউন্টার ছাড়া পথ থেকে যাত্রী উঠানো দূর পাল্লার লাক্সরি বাসসমূহের উচিত নয়। আমরা জানি এস আলম, সৌদিয়া জাতীয় অভিজাত বাসগুলো কাউন্টারে যাত্রী না পেলে হয় ওই সময়ের বাস ছাড়া বাতিল করবে, নয় তো খালি সীট নিয়ে গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। এই কারণে কক্সবাজারগামী অন্যান্য বাস, যারা পথে খালি সীটে যাত্রী উঠা নামায় অভ্যস্থ সেসব বাসে অভিজাত যাত্রীরা উঠতে চায় না। কক্সাবাজারগামী বাসগুলোর মধ্যে এস আলম ও সৌদিয়া কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা তুলনামূলক ভালো। যে কারণে যাত্রীরা যে সব পরিবহনের ব্যবস্থাপনা ভালো এবং নিরাপদ সেসব বাসে উঠে। অথচ সৌদিয়া গাড়িতে ডাকাতি অভিজাত বাস কর্তৃপক্ষগুলোর টনক নড়ার মতো। যেসব বাস যাত্রী উঠানামার অভ্যাসে আক্রান্ত তারাও বুঝেছে যে কোন সময় বাস ডাকাতি হতে পারে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সকল বাস কর্তৃপক্ষের আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
সৌদিয়া বাস কর্তৃপক্ষের যেখান-সেখান থেকে যাত্রী নেয়ার নির্দেশনা নেই। টিকেট কাউন্টার থেকে যাত্রী নেয়ার বিধানই আছে। এমতাবস্থায় সৌদিয়া গাড়ি ডাকাতি যেমন দুঃখজনক তেমন চালক-হেলপারদের অবহেলা বা ডাকাত দলের সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বার বার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সাধারণ মানুষের মাথায় ঘুরছে। এ জন্যে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের আটক অবস্থায় অধিকতর তদন্ত জরুরি। আমরা মনে করি শুধু সৌদিয়া বাস কর্তৃপক্ষ নয়, সকল অভিজাত বাস মালিকদের যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। বাস ডাকাতির ঘটনায় যে সকলগুলিবিদ্ধ ও আহত যাত্রী রয়েছে তাদের চিকিৎসার সু-ব্যবস্থাসহ আগামীতে কোন অভিজাত বাসে ডাকাতি রোধে বাস-মালিক-শ্রমিক এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্কতার সাথে পদক্ষেপ নিতে হবে।