বাসায় স্ত্রীকে হত্যা, অফিসে লাশ গুম

9

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভাড়া বাসায় পারিবারিক কলহের জের ধরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন স্বামী শওকত আলী। মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে কৌশলে সিএনজি অটোরিকশা যোগে নগরীর পাঁচলাইশ থানার নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৩ নম্বর রোডের ৬ নম্বর অফিসে এনে সেফটিক ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেন। সেফটিক ট্যাঙ্কি পরিষ্কারের সময় ট্যাঙ্কির ভেতরে অজ্ঞাত পরিচয়ের মহিলার গলিত মরদেহ পাওয়ার দুই মাস পরে রহস্য উন্মোচন করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। হত্যায় জড়িত স্বামী শওকত আলীকে (৬৫) নগরের খুলশী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান ডিবি ( উত্তর) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন।
নিহত নারীর নাম লিপি আক্তার। তিনি শওকত আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী। লিপি আক্তার বরিশাল জেলার বাসিন্দা। গ্রেপ্তার শওকত আলী এমজিএইচ গ্রুপের নাসিরাবাদ শাখার ক্লিনার হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
ডিবি (উত্তর) বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে শওকত ও লিপি আক্তারের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের তিন থেকে চার বছর পর পুনরায় তারা একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রী রূপে বসবাস করে আসছিলেন। তাদের পারিবারিক কলহের জের ধরে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর শওকত দ্বিতীয় স্ত্রী লিপি আক্তারকে শ্বাসরোধ করে ভাড়া বাসায় হত্যা করেন। পরে মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে কৌশলে সিএনজি অটোরিকশা যোগে নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৩ নম্বর রোডের ৬ নম্বর বাসার অফিসে এনে সেফটিক ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা আলী হোসেন বলেন, হত্যাকান্ডটির কোনো প্রকার ক্লু না থাকায় অধিক গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়। মরদেহটি বিকৃত, গলিত এবং দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাছাড়া আশপাশের সিসিটিভিতে দীর্ঘদিনের ফুটেজ সংরক্ষিত না থাকায় অপরাধীকে চিহ্নিত করাও সম্ভব হচ্ছিল না। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা এমজিএইচ গ্রুপের অফিসের সব স্তরের স্টাফদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তের অংশ হিসাবে সব স্টাফের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করা হয়। বেশিরভাগ স্টাফদের নজরদারিতে রাখা হয়। তার মধ্যে কিছু স্টাফের মোবাইল ফোনের কললিস্ট নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। একপর্যায়ে শওকতের প্রাপ্ত তথ্য এবং সিডিআরে প্রাপ্ত তথ্য গরমিল পরিলক্ষিত হওয়ায় তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর হত্যাকান্ডের বিষয়টি স্বীকার করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জহিরুল ইসলাম ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি-উত্তর) মো. কামরুল হাসান।
গত ৭ এপ্রিল নগরের পাঁচলাইশ থানার নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির একটি বাসার সেফটিক ট্যাঙ্কি পরিষ্কারের সময় এক অজ্ঞাত মহিলার গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। গত ২৯ মে মামলাটি তদন্তের ভার ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।