বার কাউন্সিলের সভায় বিএনপি-আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের হট্টগোল

14

পূর্বদেশ ডেস্ক

আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বর্ধিত সভায় দুই দফায় বিএনপি ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার বার কাউন্সিলের সভাকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
সভায় উপস্থিত নেতাদের থেকে জানা গেছে, সারাদেশের আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বার কাউন্সিলের বর্ধিত সভা শুরু হয়। সভায় আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত বার কাউন্সিলের সদস্যরা একে একে বক্তব্য রাখেন। এরপর দুপুর ১টার দিকে মঞ্চে বসে থাকা বিএনপির প্যানেল থেকে নির্বাচিত সিনিয়র
অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট এ কে এম বদরুল আনোয়ার দাঁড়িয়ে যান। বক্তব্যের সুযোগ না দেওয়ায় তারা প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।
এসময় এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল উচ্চস্বরে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের চারজনকে কেন বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হলো না? এভাবে সভা চলতে পারে না।’ খবর বাংলা ট্রিবিউনের
ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আমি সুপ্রিম কোর্ট বারের (আইনজীবী সমিতি) ৭ বার সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। বার কাউন্সিলে প্রায়ই সর্বোচ্চ ভোটে সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। কেন আমাদের বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হবে না?’
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আমি সুপ্রিম কোর্ট বারের তিনবারের সম্পাদক। বার কাউন্সিলের বিপুল ভোটে সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। কেন আমাদের বক্তব্য দিতে দেওয়া হলো না? অথচ আওয়ামী লীগের ৯ জন বক্তব্য দিলেন।’
তখন বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান সভার বিরতি ঘোষণা করে এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রুহুল কুদ্দুস কাজলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সব জায়গায় একই ধরনের আচরণ করবেন না।’ জবাবে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘বিরতি শেষে যদি বক্তব্যের সুযোগ না দেওয়া হয় তাহলে সভা বয়কট করবো।’
বিরতি শেষে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে সভা আবার শুরু হয়। শুরুতে বক্তব্য দেওয়ার জন্য বিএনপি থেকে নির্বাচিত সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীনের নাম ঘোষণা করা হয়।
জয়নুল আবেদীনের বক্তব্য শেষে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আমি সুপ্রিম কোর্টের বারের তিনবার সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। দুইবার দায়িত্ব পালন করেছি। চলতি সেশনেও নির্বাচিত হয়েছি। কিন্তু নির্বাচনের ৪৫ দিন পর জোর করে অন্যজনের নাম সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখনও আমি সম্পাদক।’ তার এই বক্তব্যের পরপরই আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবীরা বলেন, ‘আপনি সম্পাদক নন। মিথ্যাচার করবেন না।’ ফলে এ বক্তব্যের রেশ ধরে পুনরায় তাদের মধ্যে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিভিন্ন জেলার আদালতের সঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতির’ প্রেক্ষাপটে দেশের সব আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে বর্ধিত সাধারণ সভা ডেকেছিল আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল।