বার আউলিয়া থেকে সিটি গেট ১৫ কি.মি যানজট

13

জাহেদুল আনোয়ার চৌধুরী, সীতাকুন্ড

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখি লেন বন্ধ রেখে সংস্কার কাজ চলছে। এ কারণে মহাসড়কে প্রতিনিয়িত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
গতকাল বুধবার বার আউলিয়া থেকে নগরীর সিটি গেট পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ কিলোমিটার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। সকালে যানজট কম থাকলেও বিকালের পর এ যানজট প্রকট আকার ধারণ করে। দুপুরের পর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সংস্কার কাজের সুবিধার্থে চট্টগ্রামমুখি লেন সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিলে ঢাকামুখি লেনে (উল্টো পথে) গাড়ি চলাচল করে। এতে যানজট বাড়তে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহর থেকে সীতাকুন্ড উপজেলায় প্রতিদিন যাতায়াতকারী এক যাত্রী বলেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে মহাসড়কের সংস্কার কাজ মেনে নেওয়া যায় না। গত মঙ্গলবার অফিস শেষ করে বাসায় যেতে প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় লেগেছে। আজও অফিসে এসেছি, কিছুক্ষণ পর বাসার দিকে রওয়ানা হব। শুনছি সড়কে যানজট আছে, কতক্ষণ থাকবে আল্লাহ ভালো জানেন।
যানজটে আটকা পড়া মিরসরাই থেকে চট্টগ্রাম শহর যাতায়াতকারী ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, লাইফ লাইন খ্যাত এ মহাসড়কে এক লেন বন্ধ করে সংস্কার কাজ কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না। সড়কে গাড়ির চাপ চিন্তা করে বিকল্প পথ বের করে সংস্কার কাজ করা দরকার ছিল। আমি ব্যবসায়ী কোন সমস্য নাই, কিন্তু যারা সরকারি ও বেসরকারি চাকরি করেন, তারা অফিস সময়ে যেতে না পারলে অনেক সমস্যায় পড়েন। অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি চাকরিজীবীদের চাকরি পর্যন্ত চলে যায়। যানজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের।
সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই লেনে গাড়ি চলাচল করছে। কিন্তু দুপুরের পর গাড়ির চাপ বেড়ে গেলে চট্টগ্রামমুখি লেন বন্ধ করে ঢাকামুখি লেনে (উল্টো পথে) গাড়ি চলাচল করছে। এ সময় সড়কে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। গাড়ি চালকরা কে কার আগে যাবেন, এ প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে ছোট-খাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে সড়কে কার্পেটিং, সৌন্দর্য্যবর্ধন কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ কারণে চট্টগ্রামমুখি লেন বন্ধ করে ঢাকামুখি লেনে গাড়ি চলাচল করায় বার আউলিয়া থেকে সিটি গেট পর্যন্ত সৃষ্ট যানজটের প্রভাব পড়ছে শহরেও।
জানা গেছে, ধারাবাহিক কাজের অংশ হিসেবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারি দক্ষিণ বাজার থেকে চট্টগ্রামমুখি লেনে সংস্কার কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। একই সাথে আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম আগমনকে ঘিরে মহাসড়কের পাশে সৌন্দর্য্যবর্ধন কাজও হচ্ছে। দুটি কাজ এক সাথে করায় ব্যস্ততম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখি লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুন্ডের বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত কয়েকদিন ধরে মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখি লেনে সংস্কার কাজ করছে। যানজট তেমন সৃষ্টি হচ্ছে না, গাড়ি ধীরগতিতে চলার কারণে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হলেও হাইওয়ে পুলিশের দুটি টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। দুপুরের পর চট্টগ্রামমুখি লেনে যানজট বেড়ে গেলে ঢাকামুখি লেনে গাড়ি চলাচল শুরু করে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী পরান্টু চাকমা বলেন, ধারাবাহিক কাজের অংশ হিসেবে হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংস্কার কাজ। তবে আগামী ৪ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে মহাসড়কের পাশে সৌন্দর্য্যবর্ধনের কাজও চলছে।
জনভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ভালো কিছু পেতে হলে কষ্ট তো একটু করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি খুব দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করতে।