বারৈয়াঢালা ইউপি কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় মামলা

7

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

সীতাকুন্ড উপজেলার বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন পরিষদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামকে হুকুমের আসামিসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০/১২ জনকে।
গতকাল বুধবার মামলার বাদী ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন রেহানকে প্রশাসনিকভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তির আশ্বাস প্রদান করলে জনগণের কথা চিন্তা করে সেবা কার্যক্রম বন্ধের একদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে চালুর ঘোষণা দেন। এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফেসবুক লাইভে এসে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে হামলা ও এক সেবা প্রত্যাশীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে তিনি অনির্দিষ্টকালের জন্য সেবা কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন জানান, দোষী ব্যক্তিদের বিচারে প্রশাসনের আশ্বাস পেয়ে এবং জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমি সেবা কার্যক্রম পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গত মঙ্গলবার সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চেয়ারম্যান কার্যালয়ে ১৫ থেকে ২০ জন ব্যক্তি অতর্কিত পরিষদে আমার কক্ষে হামলা চালিয়ে সাইফুদ্দিন অভি নামের এক সেবাপ্রত্যাশীকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আমি, পরিষদের ইউপি সদস্য এবং আনসার‘রা তাদেরকে বাধা দিলে তারা হুমকি প্রদান করে সেবাপ্রার্থী লোকটিকে তুলে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার জন্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামকে দায়ী করেন চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন।
সেবা কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, দিনে দুপুরে ইউপি কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলা খুবই দূঃখজনক। এই ঘটনায় আমি নিজেই হতভম্ব ও শঙ্কিত। এ কারণে নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে ফেসবুক লাইভে এসে সেবা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেই। ঘটনার পরপরই বিষয়টি ডিডিএলজি চট্টগ্রাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন, সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদসহ সংশিষ্ট কর্মকর্তাদের অবগত করি। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের একটি দল পরিষদ এলাকা থেকে সাইফুদ্দিন অভিকে উদ্ধার করে। পরে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও ওসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দোষীদের আইনি পদক্ষেপ নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করলে সাধারণ জনগণের কথা চিন্তা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেওয়া সেবা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করি।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম ঘটনার বিষয়গুলো সম্পর্ণ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার দিন পরিষদের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করলে সঠিক বিষয় জানা যাবে। চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে হুকুমের আসামি করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিপ্রকাশ। আর সাইফুদ্দিন অভি একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। এই ইয়াবা ব্যবসায়ী সবসময় চেয়ারম্যানের সাথেই থাকে।
সীতাকুন্ড থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন পরিষদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় সাইদুল ইসলামকে হুকুমের আসামিসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা সিসিটিভি ফুটেজসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। অভিযুক্তদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ একটি সরকারি দপ্তর। এই দপ্তর থেকে সরকারের পক্ষে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যগণ সাধারণ জনগণকে সেবা দিয়ে থাকেন। আর এই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কার্যালয়ে হামলা আমরা কোনভাবে বরদাস্ত করবো না। হামলার পর চেয়ারম্যান শঙ্কিত হয়ে সেবা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন। তবে আমরা দোষী ব্যক্তিদের শান্তির বিষয়টি নিশ্চত করবো বলে আশেয়াস প্রদান করলে, উনি সেবা কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেন।