বান্দরবানে ঈদের বন্ধে ফাঁকা পর্যটন কেন্দ্রগুলো

42

বান্দরবানে পর্যটন কেন্দ্রগুলো একেবারেই ফাঁকা। বিশেষ দিনে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার পর্যটকে মুখিরত থাকলেও ঈদের ছুটিতে নিরব নিস্তবব্ধ। পর্যটকদের নেই হইহুল্লা, শুধু ছোট ছোট পাখির কিচির-মিচির শব্দ আর পশু-পাখির কোলাহল, কোকিলের ডাক শোনা যাচ্ছে। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। তাই ঈদের বন্ধে পর্যটকশূন্য বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র। জেলার পর্যটনকেন্দ্র নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক পাহাড় লেকসহ সব পর্যটন স্পটগুলোতে এবারের ঈদে পর্যটকদের আনাগোনা নেই। পাহাড়ের সৌন্দর্য্য দেখতে পর্যটকের ঢল নামে ঈদ উৎসবে। তবে করোনায় গত তিন মাস ধরে দেখা মিলেনি কোন পর্যটকের। সরকারি নিদের্শনায় গত ১৯ মার্চ থেকে জেলার পর্যটন কেন্দ্র ও হোটেল-মোটেল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল। শহরে বন্ধ রয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্টান। এতে কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মচারী বেকার পড়ে আছে। বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি থাকলে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে পর্যটন শিল্পে।
একাধিক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে প্রণোদনার আবেদন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ট্যুরিস্ট শ্রমিক মো. আলমগীর ও করিমসহ একাধিক শ্রমিক বলেন, ট্যুরিস্ট গাড়িগুলো প্রায় তিন মাস ধরে চাকা বন্ধ রয়েছে। ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিয়ে তাদের আয় রোজগার। করোনায় সবই বন্ধ হয়ে গেছে, অসহায় হয়ে জীবনযাপন করছি। করোনার কাছে বেকার হয়ে পড়ছে। বর্তমানে এই পরিস্থিতিতে নিজ নিজ বাড়িতে অঘোষিত লক ডাউনে কর্মহীণ জীবনে পরিবার নিয়ে অনিশ্চয়তার মাঝে জীবন-যাপন করছেন।
বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ বলেন, করোনার প্রভাবে বান্দরবানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন শিল্প। এ জেলার অধিকাংশ মানুষ পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু সব বন্ধ থাকায় সবাই বেকার। আয় রোজগার বন্ধ থাকায় তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বান্দরবানের অধিকাংশ ব্যবসায়ী পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কেউ কেউ আবার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে হোটেল-মোটেল নির্মাণ এবং উন্নয়নে কাজ করলেও এমন স্থবির পরিস্থিতির কারণে অনেকের এখন লোকসান গুনছে। তাই সরকারিভাবে বান্দরবানে হোটেল-মোটেল মালিক ও সংশ্লিষ্টদের জরুরিভাবে প্রণোদনা দিলে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা এগিয়ে যেতে পারবে বলে মনে করি তিনি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শামীম হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। তবে করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে বিভিন্ন রকমের সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। আগামীতেও এই সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বর্তমান সরকার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং আগামীতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা দিলে আমরা তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।