বান্দরবানে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সিসি ক্যামেরা স্থাপন

10

অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে পর্যটন শহর বান্দরবান। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে বান্দরবান জেলা শহরের পৌরসভা বাজার এলাকায় প্রথমধাপে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হচ্ছে প্রায় শতাধিক সিসি ক্যামেরা। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রথম ধাপে বান্দরবান বাস স্টেশন থেকে শুরু করে পুরো বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শহরের গুরুত্বপূর্ণস্থানে এরই মধ্যে প্রায় শতাধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন কাজ চলমান রয়েছে। এ সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে আগামীতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও হত্যার মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণ হবে বলে আশাবাদ স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের। বান্দরবান বাজার মুদি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাশ বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা জেলায় বাজারের নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা বসানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, আর অবশেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির নির্দেশনায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান পৌরসভায় সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। তিনি আরো জানান, সিসি ক্যামেরা বসানো হলে বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির মধ্যে থাকবে আর এতে চুরি ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ অনেকটাই কমে আসবে এবং অনাকাঙ্গিক্ষত কোনো ঘটনার সৃষ্টি হলে পুলিশ সহজেই অপরাধীদের খুঁজে বের করতে পারবে।স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী পিন্টু দাশ বলেন, বান্দরবান যেহেতু পর্যটন শহর সেহেতু বাজারে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে তাই পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ সবার জানমানের নিরাপত্তায় এ সিসি ক্যামেরা আগামীতে আমাদের অনেক উপকারে আসবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মো. শফিকুর রহমান বলেন, বান্দরবান পৌরসভা এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন হলে এবং পুলিশ এ সিসি ক্যামেরা সার্বক্ষনিক মনিটরিং করলে বাজার এলাকায় যানজট কমে আসবে এবং অপরাধ প্রবণতা কম দেখা দেবে। এদিকে সিসি ক্যামেরা স্থাপনকারী কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রগেসিভ আইটি সলিউশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রথমধাপে ৬২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়ে গেছে আর এ সিসি ক্যামেরা মনিটরিং এর জন্য বান্দরবান বাজার মুদি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতির অফিসে একটি ও জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি মনিটরিং রুম তৈরি করা হবে আর দুটি মনিটরিং স্থান থেকে সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরায় জনসাধারণের গতিবিধি লক্ষ্য করা হবে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রগেসিভ আইটি সলিউশনের স্বতাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার শুভাশীষ দাশ বলেন, পৌরসভা এলাকায় বিভিন্ন পিলারে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশাকরি কয়েকদিনের মধ্যে সিসি ক্যামেরার সিস্টেম পুরোদমে চালু হবে। বান্দরবানের পুলিশ সুপার জেরিন আখতার বলেন, অলি-গলি, পাড়া মহল্লায় কোথাও কিছু ঘটলে তা অনুসন্ধানে এতদিন পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হতো। তবে এবার পৌরসভা এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর ফলে অপরাধী দ্রুত শনাক্ত করা সহজ হবে এবং ডিজিটাল মনিটরিং এর মাধ্যমে শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক ভাবে বান্দরবানে প্রথমধাপে ৬২টি সিসি ক্যামেরা বসানো হলো। পর্যায়ক্রমে আমরা পুরো শহরের অলি গলিকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসবো এবং বান্দরবানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাব। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মো. ইয়াছির আরাফাত বলেন, পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির নিদের্শনায় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে পৌরসভা এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং কয়েকদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে ক্যামেরাগুলোর কার্যক্রম শুরু করা হবে। স্থানীয় বাসিন্দা ও সুশীল সমাজের প্রত্যাশা পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সম্প্রীতি রক্ষা ও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যায়ক্রমে জেলার সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পর্যটনকেন্দ্র ও বিভিন্ন সড়কে আরো সিসি ক্যামেরা স্থাপন করবে প্রশাসন।